স্বপ্নে তোমার চিঠি পাই

স্বপ্নে-পাওয়া তােমার চিঠিটি আমি
আদ্যেপান্ত মুখস্থ করেছি, পড়েছি একশােবার
তবু তার মর্মোদ্ধার হয় নি এখনাে, শুধু এই
চিঠির শব্দের দিকে চেয়ে, মাত্র পাঠ করে সম্বােধনটুকু
আমি আরাে সহস্র বছর এভাবে কাটিয়ে দিতে পারি,
এভাবে করতে পারি অশ্রুপাত, একা একা এভাবে
করতে পারি বিরহের গান, হয়তাে লিখতে পারি
বেদনাবিধুর আরাে প্রেমের কবিতা। তােমার
চিঠির দিকে চেয়ে এই চোখ লাভ করে
দিব্যবৃষ্টি, খুলে যায় তৃতীয় নয়ন;
তােমার স্বপ্নের চিঠি সারারাত পাঠ করি আমি।
এই স্বপ্নের চিঠির মধ্যে এমনকি লিখেছাে তুমি,
এমনকি পাঠিয়েছে অভিনব বার্তা বা বিষাদ-
আমি পুনরায় বেঁচে উঠি কিংবা মরে যাই;
আমার দু’চোখে আকাশের মতাে এই সুবিশাল
চিঠিখানা ছাড়া আজ আর কিছুই পড়ে না।
স্বপ্নে-পাওয়া তােমার চিঠিটি আমি খুব যত্নে
ভাঁজ করে রাখি এই পাজরের বাঁ দিকে
গােপন সেলে, যেখানে আমার এই হৃৎপিণ্ড
ওঠানামা করে; স্বর্গীয় সীলমােহর আঁকা
এই চিঠিখানি কে সে দেবদূত এসে
দিয়ে যায় এখানে আমার হাতে কিংবা কোন
স্বপ্নের সােনালি পিয়ন এই চিঠি ঘুরে ঘুরে
বিলি করে; এই সুদূর স্বপ্নের চিঠি
ডাকবাক্সে নিজহাতে ফেলেছাে কি তুমি?
তােমার হাতের স্পর্শ লেগে আছে পাতায় পাতায়।
এই স্বপ্নে-পাওয়া তােমার চিঠিটি আমি
তুলে রাখি অনন্তের বুকে, সেফটি ভােলটে,
নিশ্চয় গচ্ছিত রাখি জাতিসঙ্ঘের সদর দপ্তরে;
রােজ রাতে স্বপ্নে তােমার চিঠি পাই, একদিন পেয়েছি বাস্তবে।

৭.৪.১৯৯৫