পোস্টম্যান

পোস্টম্যান চিঠি দিয়েছে কাল দুপুরে
যখন গীটার নিয়ে গান বাঁধছি সুরে
চিঠি, ধুসর খামে এসেছে আমার নামে
কি হয়, কি হয়, খুব বিপন্ন সময়
যার কথা অকপটে লিখেছ কথার ফাঁকে
তোমার সাথে আমি দেখেছি তাঁকে, পহেলা বৈশাখে
ছায়ানট বটতলে যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলে
সকালের রোদ দেখি তোমাদের মুখে…
তাই
এত আলো তবু এত ছায়া চারপাশে
যত আলো জ্বলেছিল সব নিভে গেছে
সাইরেণ ধ্বনি শুনি আকাশে আকাশে
আকাশটা কেন এত দূরে সরে গেছে
কথা আর গান আর হাহাকার নিয়ে
আমি তোমাকে এঁকেছি
সে কথা সে গান আজ সব থেমে গেছে।

কবিতায় গুণদা শহীদ কাদরী
যাবো আমি কোনদিন কবিতার বাড়ি
নিলুফার ফিরোজা কলিম শরাফি
গান শুনে গান বুনে কাছাকাছি থাকি
আড্ডা জমে না যদি বিশু না আসে
গল্প কবিতা সে খুব ভালবাসে
গল্প উপন্যাসে ঘর আমার ঠাঁসা
ইলিয়াস মার্কোয়েজ মারিও হোসা
ত্রিদিব ছিল তাই টেনেছিল ঢাকা
সে নেই শহর তাই ফ্যাকাশে ও ফাঁকা
মিজিবর মুজিবর গলা ভেঙে আসে
দ্যাখো, দেশ আজ ভরে গেছে দীর্ঘশ্বাসে ,
এত আলো তবু এত ছায়া চারপাশে
তাই যত আলো জ্বলেছিল সব নিভে গেছে
সাইরেণ ধ্বনি শুনি আকাশে আকাশে
আকাশটা কেন এত দূরে সরে গেছে
কথা আর গান আর হাহাকার নিয়ে
আমি তোমাকে এঁকেছি
সে কথা সে গান আজ সব থেমে গেছে।

রমনার ঘাসে ঘাসে তোমার নাম
লিখেছিলাম আমি লিখেছিলাম
প্রদীপের ছায়া আর ছায়ার প্রদীপ
সন্ধ্যা হলে দেশ নিস্প্রদীপ
বিপদজনক এই সময়ের সাথে
বোঝাপড়া ক’রে নাও দিনে ও রাতে
ভয়াল হিংস্র সব মুখ সারি সারি
গনতান্ত্রিক সব দৃশ্য বাহারি
আলিমের ভাটিয়ালি কর্তার গান
সবটুকু নিয়ে আমি ফিরে দাঁড়ালাম
পোস্টম্যান পোস্টম্যান চিঠি নিয়ে আসে
দেখি, রমনার ঘাসে আজ সব মুছে গেছে
তাই এত আলো তবু এত ছায়া চারপাশে
যত আলো জ্বলেছিল সব নিভে গেছে
সাইরেণ ধ্বনি শুনি আকাশে আকাশে
আকাশটা কেন এত দূরে সরে গেছে
কথা আর গান আর হাহাকার নিয়ে
আমি তোমাকে এঁকেছি
সে কথা সে গান আজ সব থেমে গেছে।

তোমার মুখে গান ছিল তাই গান বেঁধেছি
গীটার হাতে নিয়েছি
বৈশাখের প্রথম সকালে তুমি জানিয়ে দিলে
আমার গান শুধু প্রিয়, বাকিটুকু বুঝে নিও
দেখি রমনার বটতলে জ্বালাধরা দুই চোখে
সকালের রোদ জ্বলে তোমাদের মুখে
তাই…।।

কন্ঠ ও সুর: শান্তনু বিশ্বাস