ঋণ স্বীকার

গোলাপ সুঘ্রাণ ছড়াতে ছড়াতে আমার বইয়ের
পাতা জুড়ে বসে বলে, “তুমি যাকে ভালোবাসো সে
আমার সৌন্দর্য নিয়ে বসে আছে সোফায়;
আমি তার বিরুদ্ধে নালিশ জানাতে এসেছি”।

একটি বুলবুল আমার টেবিলে-রাখা
চায়ের পেয়ালা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে
বলে সুর ঝরিয়ে, “যে তোমার সর্বেশ্বরী
সে আমার গান নিজের কণ্ঠে করেছে ধারণ;
আমি তোমাকে এ-কথা বলতে
দূরের বাগান ছেড়ে তোমার ঘরে এসেছি”।

শ্রাবণের মেঘদল আমাকে জড়িয়ে ধরে মেঘলা
স্বরে করে উচ্চারণ, “যে তোমার স্বপ্নের
অভ্রময় পথে হাঁটে একলা, তার চুলের ঝরনা
ধার নিয়েছে আমাদের শোভা; ঋণ স্বীকারের নাম নেই-
এ-কথা জানাতে আকাশ থেকে
তোমার ছোট ঘরে নেমে এসেছি”।

সুন্দরবনের হরিণ ঝিলের জল থেকে
মুখ তুলে হাওয়া চিরে, খুরে ধুলো উড়িয়ে
ছুটতে-ছুটতে আমার ঘরে পৌঁছে গ্রীবা
দুলিয়ে বলে “যে তোমার প্রিয়তমা, সে আমার চোখের
গড়ন করেছে হরণ আমি সেই অপরাধের
বিচারের দাবি নিয়ে এসেছি”।

আমি আমার সদ্যলেখা প্রেমের কবিতা
ওদের প্রত্যেককে দেখিয়ে বলি,-
দ্যাখো, এই পংক্তিমালায় তার হয়ে তোমাদের সবার
ঋণ স্বীকারের তুমুল ঝংকার তুলেছি।

২৬.৭.১৯৯৪