নন্দগুপী

হঠাৎ কেন দুপুর রোদে চাদর দিয়ে মুড়ি
চোরের মতো নন্দগোপাল চলছে গুড়ি গুড়ি?
লুকিয়ে বুঝি মুখোসখানা রাখছে চুপি চুপি?
আজকে রাতে অন্ধকারে টেরটা পাবেন গুপী!

আয়না হাতে দাঁড়িয়ে গুপী হাস্‌ছে কেন খালি?
বিকট রকম পােশাক ক’রে মাখ্‌ছে মুখে কালি!
এমনি করে লম্ফ দিয়ে ভেংচি যখন দেবে
নন্দ কেমন আঁৎকে যাবে- হাসছে সে তাই ভেবে।

আঁধার রাতে পাতার ফাঁকে ভূতের মতন করে?
ফন্দি এঁটে নন্দগোপাল মুখোস মুখে ফেরে!
কোথায় গুপী, আসুক না সে ইদিক পানে ঘুরে-
নন্দদাদার হুংকারে তার প্রাণটি যাবে উড়ে।

হেথায় কেরে মূর্তি ভীষণ মুখটি ভরা গোঁফে?
চিমটে হাতে জংলা গুপী বেড়ায় ঝাড়ে ঝোপে!
নন্দ যখন বাড়ির পথে আসিবে গাছের আড়ে
“মার মার মার কাট রে” বলে পড়বে তাহার ঘাড়ে!

নন্দ চলেন এক পা দু পা আস্তে ধীরে গতি
টিপি টিপি চলেন গুপী সাবধানেতে অতি-
মোড়ের মুখে ঝোপের কাছে মারতে গিয়ে উঁকি
দুই সেয়ানে এক্কেবারে হঠাৎ মুখােমুখি!

নন্দ তখন ফন্দি ফাঁদন কোথায় গেল ভুলি
কোথায় গেল গুপীর মুখে মার মার মার বুলি!
নন্দ পড়েন দাঁতকপাটি মুখােস-টুখােস ছেড়ে
গুপীর গায়ে জ্বরটি এল কম্প দিয়ে তেড়ে।

গ্রামের লোকে দৌড়ে তখন বদ্যি আনে ডেকে
কেউ-বা নাচে কেউ-বা কাঁদে রকম-সকম দেখে।
নন্দ গুপীর মন্দ কপাল এমনি হ’ল শেষে
দেখলে তাদের লুটোপুটি সবাই মরে হেসে!