বৃষ্টি

এসো বৃষ্টি,
এসো তুমি অতল ভূতলে রুদ্ধ স্তম্ভিত পাষাণে
দীর্ঘ দগ্ধ প্রতীক্ষার পরে।
এসো যেথা তপ্তবাষ্পনিশ্বাসী পাহাড়
অনন্তকালের ধৈর্য ধূমল অক্ষরে
লিখে যায় ক্লেদময় মেদগাত্র-‘পরে।
এসো সেই প্রাথমিক সুপ্তির পাথরে
সৃষ্টির আদিম বীজ যার বক্ষে লীন।
এসো তুমি অর্ধ-সৃষ্ট অস্পষ্ট অতলে
মাটি যেথা জল হ’য়ে ঝ’রে, জল যেথা অগ্নি হ’য়ে জ্বলে,
অগ্নি যেথা বায়ু হ’য়ে শূন্যে মিশে যায়।
এসো মগ্ন কল্পনার মূলে, এসো তুমি সত্তার শিকড়ে,
মুক্ত করো সৃষ্টির উদ্দাম বীজ,
ছিন্ন করে স্তব্ধতার পাষাণ-শৃঙ্খল।
তোমার ঝঙ্কার স্বরে শূন্যতার কুহরে-কুহরে
জন্মের প্রচণ্ড মন্ত্র উচ্চারিত হোক;
ভেসে যাক স্খলিত পাহাড়
বিগলিত বস্তুর বন্যায়।
মাটি হোক কঠিন কোমল,
জল হোক তরল শীতল,
অগ্নি হোক উদ্দীপ্ত উজ্জ্বল,
রূপ হোক, ছন্দ হোক, সৃষ্টি হোক, হোক বিশ্বলোক।