স্বর্গে রিপোর্ট লিখে

স্বর্গে রিপোর্ট লিখে ঢের দিন- মর্ত্যে তাহা টেনে
পরস্পরের মাঝে কাগজের ক’রে পরিবেশ
সুস্থতা রয়েছে চিত্তে- যে-দিন মিশর তার প্যাপিরাস সৃষ্টি করেছিল
সেই থেকে সবই হল ক্রমে শুভ্র কাগজের দেশ

যাহারা অন্যথা ভাবে- মনে করে মানুষের চলন্ত জীবন
সব-চেয়ে প্রধানত রক্তমাংসময়
আধুনিক দার্শনিকদের তারা পড়েছিল শুধু
দর্শনের তত্ত্বকথা গুহায় নিহিত তবু রয়

মাংস থেকে জন্ম নেয় যেই চিন্তাজাল
চির-দিন রক্তে তাহা হয়ে যায় লীন
শূকর, অধ্যক্ষ, শুঁড়ি, শেয়াল, উকিল
সকলেই নিরন্তর মৃত্যুর অধীন

ইলেকট্রোরেডিওগ্রাফ মস্তিষ্ক যেখানে
মাছিও বসে না এসে নাকের ডগায়
সোনা, তেল, খনিজ পদার্থ পেতে গিয়ে
আমাদের ক্যোটেশানে কাজ চ’লে যায়

ঘরে মধু আছে- জেনে- তবু
পর্বতে অনেক লোক ছুটে যায় বটে
কাগজের অন্তঃসারে হস্তক্ষেপ ক’রে রোজ ভোরে
প্রাতরাশ জিতে থাকে আমাদের হ্যাভেনা চুরুটে।

অনেক স্বর্গীয় সাদা কাগজের ভিড়
টেবিলে নিরস্ত ক’রে রেখে দেয় অমায়িক মানুষের মন।
আমাদের লোকসেবা নিয়মিত কাগজ বিলিয়ে।
না হলে কি খেপে যেত গোল্ড বুলিয়ন।

গভীর কঠিন কাজ- অনেক আশ্চর্য সূর্যে পেকে গিয়ে তবু
জলের মতন সব সবুজ- সহজ- আজ ভোরে।
যেমন মঙ্গল থাকে বৃহস্পতি-নক্ষত্রের পশ্চিমে- পৌষে
মাঘে তবু দেবতাগুরুর পুব কান ঘেষে ঘোরে।

নির্জন মঙ্গল থেকে নিয়তই জন্ম হয় আত্মপ্রসাদের
বৃহস্পতি-নক্ষত্রের থেকে নামে সমীচীন জ্ঞান
আমাদের শৃঙ্খলায় মায়াবীর ইন্দ্রজাল নেই
রয়ে গেছে স্বতঃসিদ্ধ নিসর্গের মতন কল্যাণ।

প্যাপিরাস সৃষ্ট হয়েছিল কবে মিশরের মনে
নিনিনিনা দেশে ব্যাঙ্ক- স্বর্গীয় কলম
সেই থেকে খাদ্য পানীয় কাজ মৈথুনের শেষে
আমরা ক্বচিৎ পড়ি সমার্সেট মম।

কিক্বাকি’র বানরেরা করতালি দিয়ে হাসে চিড়িয়াখানায়
বাক্সের নাশপাতিগুলো চালানির সমুদ্রের থেকে
ফুল হয়ে ফিরে আসে অকাতর দার্শনিকদের-
সমাজ ও পদার্থবিদ্যায় ন্যস্ত ডায়ালেকটিকে।