পৌষসংক্রান্তি

যদিও ঈষৎ-দীর্ঘ দিন, তবু কী-দীর্ঘ শীত!
যদিও ক্কচিৎ দক্ষিণের ক্ষীণ কম্পনে হঠাৎ হাড়ে
বাতাস লাগে; তবু উত্তুরে হাওয়ার হাত
এখনও গাছের কাপড় কাড়ে, সবুজ সোনায় পড়ে ডাকাত,
রুদ্ধ রাত, শীর্ণ দিন। কৃষ্ণচূড়ার শূন্য ডালে
যদিও একটি ছোট্ট পাতা দিয়েছে উঁকি,
তবু-তো শীত, এখনও শীত; কৃষ্ণচূড়ার অনেক দেরি,
গ্রীষ্ম এখনও অনেক দূর।

কাল থেকে, যাক, পড়লো মাঘ।
আজ দেখি তাই সকাল থেকে
দল বেঁধে পাতা ঝ’রে-ঝ’রে দিলো
আঁচল পেতে, আসবে ব’লে বাংলাদেশের বিয়ের ঋতু
রঙিন দিন, উতল রাত। যুগল রাত, মাঘের রাত
শীতের নয়, দীর্ঘ নয়;- পৃথিবীর যৌবনের দিন
যাদের হৃদয়ে অন্তহীন, জীবনের উন্মাদ নবীন
গ্রীষ্ম যাদের বাহুতে বাঁধা:- সেই-সব নব দম্পতীরা
সুখী হোক, আহা, সুখী হোক।
জীবন যখন গ্রীষ্মহীন,
কৃষ্ণচূড়া ফোটে না আর;
পৃথিবী শুধু ছড়ায় জরা,
ঝরায় পাতা, তখনও তারা
সুখী হোক।
যখন শীত বাড়ায় হাত, একলা রাত, শুকনো বুক,
তখনও হাতে একটু থাক একটু তাপ, একটু সুখ।