উঠানের পায়রা শালিক

উঠানের পায়রা শালিক কাক উড়ে-উড়ে বলে:
‘এত দিন নক্ষত্রের তলে
রৌদ্রের আকাশে
তোমরা তো ছিলে এই খোড়ো-ঘরে আমাদের পাশে
তোমরা কোথায় যাও আজ, আহা, এই সব মাঠ ঘাস ছেড়ে’
বাতাবি’র ডালে ব’সে ঘাড় নেড়ে-নেড়ে
বলে তারা এই সব কথা
গৃহবলিভুক পাখি উড়ে বলে, ‘তোমরা কোথায় যাও সত্যি বলতো’

খড়ের চালের ‘পরে উড়ে আসে, নেমে আসে উঠানের ‘পর-
‘এই সব স্নিগ্ধ খোড়ো-ঘর
শূন্য ক’রে যাও কেন? জিনিস বোঝাই ক’রে গোরুর-গাড়িতে
তোমরা কোথায় যাও আজ এই পউষের শীতে?’

‘(তোমরা কোথায় যাও) ঘরবাড়ি ফাঁকা ক’রে-এই গাছগাছালির গান-ভাঙা পুরোনো মন্দিরে
আমরা তো আমাদেরই নীড়ে
রয়ে গেছি ঢের দিন-কোনও দূর বিদেশের ক্ষুধা এসে
আমাদের করে না আঘাত
এখানে কি রূঢ় ছিল? আরও রুক্ষ রাত?’

‘সেইখানে পাবে না-কি আরও স্বপ্ন-আরও তৃপ্তি-প্রেমের সন্ধান
পাবে না-কি ত্রাণ’
জীবনের হতাশার বেদনার বিচ্ছেদের হিংসার কুয়াশার থেকে
বলে তারা কলরবে ডেকে।

‘যে-পথেই যাও-না ক’-পৃথিবীর শেষে গিয়ে বাঁধো যদি ঘর
প্রেম প্রীতি সান্ত্বনা পাবে না তবু
যেখানে জীবন আছে-যত দূর পথে, আহা-সেখানেই অকারণে ফড়িঙেরও বুকে রক্ত ঝরে
কোথাও তৃপ্তি নেই
পাবে না ক’ শান্তি তবু বুকের ভিতরে।’