পরাবাস্তব বাঙলা

স্বপ্ন থেকে অবাস্তব পথ খুঁজে
একটা সুড়ঙ্গ খুঁড়ে আস্তে ঢুকলে ভেতরে
দশটা জল্লাদ সাজালো তোমাকে কালো রক্তে বিবাহোৎসবে
বস্তু-বাস্তবতা-জ্যোৎস্না-রঙের বদলে দুললো স্বপ্ন-মাংস-ব্যাংক-
ওষ্ঠ- পদ্ম- হরিণ- সূর্যাস্ত- মানুষ- জন্তুর সামনে তোমার বিকল্প চেহারা। আমি লাল
হৃৎপিণ্ডের সাথে তোমার মুখের রূপ মেলাতে মেলাতে মিলিয়ে ফেললাম চিন্তাব্যতিরেকে একজোড়া বিশাল কদর্য হিংস্র কালো বুটের সঙ্গে। কখনোবা এক-
জোড়া দুমড়ানো থাকি মোজার সঙ্গে। তুমি ছাপ্পান্নো হাজার
বর্গমাইলব্যাপী একজোড়া কালো বুট,
দৈত্যের দু-কাঁধের স্বর্ণপদক।

তোমার নিতম্বে আপাদমস্তক
নগ্ন খেলা ক’রে একটা বন্দুক আর দুটো শিরস্ত্রাণ,
তোমাকে গণ্ডারগর্ভ করার জন্যে পাখি-ডাকা-ভোরে
দেগে ওঠে একুশটা হিংস্র কামান।

রাইফেলের নির্দেশে তুমি ফোঁটাচ্ছো
সামরিক পদ্ম, সাইরেনে কেঁপে নামাচ্ছে
বর্ষণ, নাচছো বৃষ্টিতে চাবুকের শব্দে, এক ম্যাগজিন-
ভর্তি হলদে বুলেট পাছায় ঢুকলে তুমি জন্ম দাও নক্ষত্ৰস্তবকের
মতো কাঁপাকাঁপা একটা ধানের শীষ। প্রকাশ্য রাস্তায় তুমি একটা লজ্জিত রিকশা ও
দুটো চন্দনা পাখির সামনে একটা রাইফেল- একজোড়া বুট-তিনটা শিরস্ত্রাণের সঙ্গে
সঙ্গম সারো;- এজন্যেই কি আমি অনেক শতাব্দী ধ’রে স্বপ্নবস্তুর
ভেতর দিয়ে ছুটে-ছুটে পাঁচশো দেয়াল-জ্যোৎস্না-রাত্রি-
ঝরাপাতা নিমেষে পেরিয়ে বলেছি, ‘রূপসী, তুমি,
আমাকে করো তোমার হাতের গোলাপ।’