থীবী

নগরের নৈর্ঋত কোণায়, লাল থাবা মেলে, কেশর ঠেকিয়ে মেঘে,
পা রেখে দেশের সকল শব্জিতে পদ্মে, কালো চোখ জ্বেলে, আছে জেগে
চতুষ্কোণ দারুণ মর্মট। লাস্যময়ী তরুণীর গর্ভে রুগ্ন হয়
প্রথম সন্তান, প্রেমিকার জরায়ুতে প্রেমিকের মধু রোগে ক্ষয়
হয় প্রবাহিত হ’তে হ’তে; পুষ্পপ্রিয়, শান্ত মালির চোখের
ফুলদানিতে শুষ্ক হ’য়ে বারে বিবর্ণ গোলাপ, শ্রমী কর্মিষ্ঠ লোকের
দেহ বিকলাঙ্গ হয় অকস্মাৎ, পাকা ধানের গুচ্ছে অপরিমিত
ফলে রোগবীজ; রুগ্ন হয় ইলিশ বোঝাই নদী, রুই কবলিত
দিঘি; জীর্ণ হয় রসময় বৃক্ষ, নগরীর রূপসীরা- অদ্বিতীয়;
দুষ্ট, মারাত্মক ব্যাধি, অভিচারী, নিজেকে সর্বত্র ক’রে তোলে প্রিয়।
কী যে অভিচারী এই রোগ, অনায়াসে স্থান পায় তরুণ মজ্জায়,
রক্তে, মাংসকোষে, এবং তাদের দেহ তুলে দেয় মুমূর্ষু শয্যায়,
সে-তরুণ, দেহে যার প্রতিভার দীপ্র শিখা রক্ত হ’য়ে জলে,
কালব্যাধি খুঁড়ে খায় তাকে, অন্ধকার পায় তার চোখের বদলে,
থীবীতে তরুণ নেই আলিঙ্গনে, চুম্বনিমগ্ন থরোথরো স্তনে
দয়িতার; তারা, যুবকেরা, সব কাজ শয্যরত চিকিৎসাভবনে
আরোগ্য দুর্লভ জেনে। তারুণ্য ও ব্যাধি অভিন্নবোধক; রুগ্ন থীবী,
অসুস্থ প্রদীপমালা রাজপথে, রুগ্ন পাখিদের উড্ডীন পৃথিবী।