চক্ষুস্থির

ক্লান্ত জনসাধারণ আমি আজ,- চিরকাল;- আমার হৃদয়ে
পৃথিবীর দণ্ডীদের মতো পরিমিত ভাষা নেই।
রাত্রিবেলা বহু ক্ষণ মোমের আলোর দিকে চেয়ে,
তার পর ভোরবেলা যদি আমি হাত পেতে দিই
সূর্যের আলো দিকে,- তবুও আমার সেই একটি ভাবনা
অতীব সহজ ভাষা খুঁজে নিতে গিয়ে
হৃদয়ঙ্গম করে সব আড়ষ্ট, কঠিন দেবতারা
অপরূপ মদ খেয়ে মুখ মুছে নিয়ে
পুনরায় তুলে নেয় অপূর্ব গেলাস;
উত্তেজিত না-হ’য়েই অনায়াসে ব’লে যায় তারা:
হেমন্তের খেতে কবে হলুদ ফসল ফলেছিল,
অথবা কোথায় কালো হ্রদ ঘিরে ফুটে আছে সবুজ সিঙাড়া।
রক্তাতিপাতের দেশে ব’সেও তাদের সেই প্রাঞ্জলতায়
দেখে যাই সেই সোনালি ফসল হ্রদ, সিঙাড়ার ছবি;
আমার প্রেমিক সেই জলের কিনারে ঘাসে- দক্ষ প্রজাপতি;
মানুষ-ও-ছাগমুণ্ড কেটে তাকে শুদ্ধ ক’রে দিয়ে যাবে অনাগত সবই,
এক দিন হয়তো-বা;- আজ সব উত্তমর্ণ দেবতাকে আমার হৃদয়
যে-সব পবিত্র মদ দিয়েছিল- যে সব মদির
আলোর রঙের মতো ম্লান মদ দিয়ে গিয়েছিল,-
যখনই চুমুক দিই হ’য়ে থাকি চর্মচক্ষুস্থির!

নিরুক্ত। আষাঢ় ১৩৪৯