হে সঙ্গীতকারী তরু

‘হে সঙ্গীতকারী তরু,- বৈশাখের আকাশের নিচে
হে গুহার জাদুকর, রাত্রির পূর্ণ অন্ধকারে
তোমার পিপাসা কবে ঝরনার মতো স্ফীত হয়ে
আবার নামিবে এসে পৃথিবীতে নদীর আকারে-‘
বলিল নিসর্গ জেগে- আমার আত্মার দিকে চেয়ে
গুহা ও গাছের মতো মনে ক’রে মিছেই আমারে।

আমি শুধু দিনের আলোয় দ্রুত ধাবমান হয়ে
সূর্যকে পিছনে রেখে- শরীরের ছায়ার পিছনে
ছুটিতেছিলাম ক্রমে- চারি-দিকে অসংখ্য মুকুরে
চকিত ছবির মতো জীবন্ত রঙের বিচ্ছুরণে
ভাই, বন্ধু, জায়া, শত্রু হরিণের মতো দ্রুত খুরে
ছুটে যায়- আমারই মতন প্রাণপণে।

কোথাও আকাশ থেকে যেন কেউ ডিম
শানিত সোনা’র ডিম পৃথিবীতে ছুঁড়ে
পামীরের উচ্চতা- সাহারা’র সমতল
মানুষের পরম আয়ুরে
গাঁথিছে মণির মতো তার পর সূতার ভিতর
সর্বদাই পৃথিবীর পথ হতে স’রে থেকে তিন ধনু দূরে।

‘আদিম ফুলের জন্ম দিয়েছিল যেই গাছ
আমাদের পৃথিবীতে এনে এক-দিন
প্রথম পাথর সৃষ্টি করেছিল যে-পাহাড়
আমাদের হাতে নিয়ে সেই সব ফুল আর পাথরের ঋণ
আবার ফিরায়ে যদি দিতে পারি আদি ভূমিকায়-‘
এই ভেবে দ্রুতগতি হরিণেরা দিগন্তের মুকুরে বিলীন।