কোথাও কিছু নেই

মনে হয় যেন কেউ মৃত হয়ে প’ড়ে আছে রাত থেকে- কোথাও প্রাসাদে
কী ক’রে সে ম’রে গেল সে-কথা আমার চেয়ে সমুৎসুক ভিড়
বেশি জানে- তাহাদের দিকে আমি চেয়ে দেখি- নর, নারী, অনেক বালক
অনেক স্থবির, শিশু চ’লে যায়- এখানে বাতাবি-ফল
চৈত্রের বাতাসে ন’ড়ে মাটির উপরে তার ছায়া ফেলে- নদীর ভিতর থেকে রোদ
আগুনের আরশির মতো ম্লান দেয়ালের ‘পরে কেঁপে ওঠে
পুরঞ্জয়-সদাগর অন্ধকার জাজিমের ‘পরে খুন-
খুন হয়ে টেঁসে গেছে কাল রাতে- ব’লে নিগ্রো-সঙ্গীতের মতন ডিণ্ডিমে
আবার জ্বলন্ত সূর্যে লাল, কালো, হলুদ, পিঁয়াজি সব জ্যাকেট, শেমিজ, শার্ট নাচে
তাহাদের চোখে ক্রোধ- সকলের হাতে যেন মর্মরের মতো সাদা বডকিন
কোথাও খুনে’কে পেলে খুন ক’রে মর্মরের মতো সাদা র’বে পুনরায়।
ভিড়ের ভিতরে সব শিশুদের কাকের মতন স্বচ্ছ চোখে
এখনও নির্দেশ নেই;- শান্তি নেই- নীরবতা নেই- শুধু ক্ষীণ আলোড়নে
বিষয়ের অগ্নি আছে- বালকেরা ডোরাকাটা জামার আস্ফোটে
কেমন মুখর তারা অনুভব ক’রে দেখে।- এই সব বীজ;-
আমরাও ম’রে গেলে কপালে আঘাত ক’রে বড়ো রৌদ্রে ছুটে
ধুলো ও বালির সাথে ঘুরে যাবে এক দিন- শীর্ণ শশকের মতো সাদা
খুনি ও খুনি’র পিতা- খুনি ও খুনি’র শূন্য জননীকে খুন ক’রে ফেলে।
অইখানে নারীদের ধূসর আঁচলে, ফ্রিলে, মণিবন্ধে, কমনীয়তায়
পূর্বপুরুষেরা যেন শ্রাবণের বাতাসের শব্দ শুনেছিল?
এই সব নারীদের চুল কালো উচ্ছৃঙ্খল কাকের রাত্রির মতো
পুরঞ্জয়-সদাগর সাধারণ মানুষের থেকে সর্বদাই
মায়াবীর জাদুবলে তিন বার তিন ধনু দূরে থেকে তবু
নিটোল জাজিমে কাল অন্ধকারে খুন হয়ে গেছে ব’লে
আঙুলে কামড় দিয়ে শিরার মতন নীল আঙুলের যন্ত্রণায়
কেঁদে ওঠে এরা;- এদের হৃদয়ে স্তন ঝাঁকুনিতে তিতো বোতলের
নরম ফেনার মতো- চারি-দিকে এই সব কানি, ফালি, বডিসের
উত্তেজনা। পুরুষের সাথে মিশে এই সব বায়ু
বায়ুতে আঘাত করে- উলঙ্গ পায়ের ইন্দ্রজালে (তারা সব)
জলের উপর দিয়ে চ’লে যায়- তবুও কোথাও কিছু নেই।