ঘাসবন, ঘাসবন

ঘাসবন, ঘাসবন, হাঁটু উঁচু ঘাসের জঙ্গল
তোমার কী নাম ভাই, বলো কোন ঠিকানা তোমার
আমি থাকি পাঁচিলের পারে, ওই রেলের পাঁচিল
ওখানে, পুরোনো সব ওয়াগন লক্কড় যন্ত্রপাতি
ভাঙা কারখানা শেড আর ওই স্টিম ইঞ্জিনটাও
যার গায়ে মরচে, ছ্যাঁদা, চাকা থেকে পাকিয়ে উঠেছে গাছগাছালি
বাফারে বোলতার একটা চাক
ওইটাই আমার ঠিকানা- ওখানে কী করতে যাও তুমি
বল পড়লে খুঁজতে যাই, পন্টু মারল, ছয় পেরিয়ে ছয়
বলটা হারিয়ে দিয়ে চলে গেল নতুন একটা ক্যাম্বিসের বল
তাই খুঁজতে আসি,- না না খবরদার এখানে এসো না
পুরনো লোহার টুকরো, ভাঙা কাচ, এখানে উন্মুখ হয়ে আছে
তোমার কিশোরপায়ে বিধে যাবে, খুব লাগবে, দেখো
বিধলে বার করে দেবো, তাই বলে তোমার কাছে যাবো না ঘাসবন?
অমন সবুজ তুমি অমন নিশ্চুপ- বৃষ্টি হলে
টাবুদের ছাদ থেকে দেখি আমি ঐ ভাঙা ইঞ্জিনের মাথায়
কাক ভিজছে, কাঁটাতার, সেও ভিজছে, ইঞ্জিনের ছাদে
একটা একহারা লতা, কী সবুজ, নুয়ে পড়ছে মরচের কালোয়
তাও যাবো না? না এসো না, ও কিশোর হাতছানি সুন্দর
কিন্তু তার নীচে ওই ঘাসের তলায় আছে বিষমুখে সাপ
কী করবে, কামড়াবে? বেশ কামড়াক, কী হবে? মরে যাবো
কিন্তু ঘাসবন ওগো হাঁটু উঁচু ঘাসের জঙ্গল
এমন সবুজ তুমি, একবার পাঁচিল টপকে লাফিয়ে পড়ব না
তা কি হয়?
একবার তোমার মধ্যে পা ডুবিয়ে হাঁটবো না?
কই সাপ? কামড়াক দেখি এসে!
কামড়েছে, মরিনি তাতে ভাঙা লক্কড়ের মধ্যে
আর একটি বিষমুখ সাপ হয়ে
ঘাসের জঙ্গলে থেকে গেছি।