সেই মুখ খানি


কেমনে ভুলিব হায় সেই মুখ খানি?
ফুটন্ত কমল সম
হৃদয় সরসে মম
শোভিতেছে সমভাবে দিবস যামিনী!
কেমনে ভুলিব আমি সেই মুখ খানি?


সদা মনে পড়ে,-
সেই জ্যোতি, সে লাবণ্য, সে চারু গঠন,
বিলোল নয়ন দ্বয়,
অতুলিত শোভাময়
চন্দ্রমা জিনিয়া সেই দেহের বরণ!


কেমনে ভুলিব!
বন কুসুমের মত অতি সুকোমল!
সহজে শুকায়ে যায়,
লুকাইয়া থাকে হায়
আসেনা কাহারো পাশে ভয়েতে বিহ্বল!


হায় কি মধুর!
একটুকু লজ্জা পেলে যেন মরে যায়!
তোলেনা নয়ন আর,
কি শোভা তখন তার!
আছেকি জগতে আর এত শোভা হায়?


বিধাতা এমনি করি গড়িয়াছে তায়!
সে বিনে তুলনা তার
নাহি এ ভুবনে আর,
স্বর্গের কুসুম সে যে এসেছে ধরায়!


এমনি অতুল!
কোকিলা লজ্জিত শুনি যার সুধা-বাণী,
যাহার অধরে শ্বাসে
গোলাপের গন্ধভাসে
কেমনে ভুলিব আমি সেই মুখ খানি!


এমনি সুন্দর!
কি দিব তুলনা তার? উর্দ্ধ্বে চন্দ্রমার
অতুলিত রূপ রাশি,
নিয়ে গোলাপের হাসি,
এ দুয়ের শোভা জিনি মুখ জ্যোতিঃ তার!


না ছিল শঠতা সেই চটুল নয়নে,
অফুরন্ত স্নেহ রাশি,
প্রণয়ের সুধা হাসি
ভাসিত সতত সেই নয়নে বদনে!

১০
তাহার বিচ্ছেদ আমি কি করে সহিব?
সেই ভালবাসা বাসি,
সেই মুখ, সেই হাসি,
সে মধু মাখানো কথা কেমনে ভুলিব?

১১
কেমনে ভুলিব সেই প্রেম-সম্ভাষণ,
আমার এ কণ্ঠ ধ’রে
সাদরে মধুর স্বরে
করিত সে হেসে হেসে কত সম্বোধন!

১২
দুর হ’ক জাতি ধৰ্ম্ম, হ’ক কাণাকাণি-
এ হৃদয় যারে চায়
কেমনে ভুলিব তায়,
হৃদয়ে অঙ্কিত তার সেই মুখ খানি!

[মূল বইতে ক্রমিক নং ৩ এর পর ৪ নং নাই। ভুল করে সেখানে ৫ থাকায় এখানেও মূল বই’র অনুকরণে সেভাবেই রাখা হলো।]