সুরা তকভীর

শুরু করিলাম শুভ নামেতে খোদার,
করুণা-আকর যিনি দয়ার আধার।

সঙ্কুচিত হয়ে যবে সূর্য যাবে জড়ায়ে,
তারকা সব পড়বে যখন ইতস্তত ছড়ায়ে,
পর্বত সব সঞ্চারিয়া ফিরবে যখন (ধূলির প্রায়)।
পূর্ণ-গর্ভা উটগুলিরে দেখবে না কেউ উপেক্ষায়,
বেরিয়ে আসবে বুনো যত জানোয়ারেরা বেঁধে দল,
হবে প্লাবন-উদ্বেলিত যখন সকল সাগর-জল।
আত্মা হবে যুক্ত দেহে। জ্যান্ত পোঁতা কন্যাদের
পুছব যখন কোন দোষে বধ করছে পিতা তোদের?
যখন খোলা হবে সবার আমল-নামা; সেই সেদিন
জ্বলবে দোজখ ধু ধু, হবে আকাশ আবরণ-বিহীন,
জানবে সেদিন প্রতি মানব, সাথে সে কী অনল তার!
শপথ করি ওই চলমান আর স্থিতিশীল তারকার,
রাত্রি যখন পোহায় এবং উষা যখন ছায় সে দিক,
শপথ তাদের, মহিমময় রসুলের এ বাণী ঠিক।
আরশ-অধিপতির কাছে প্রতিষ্ঠা তাঁর, সেই রসুল
বিশ্বস্ত, সম্মানার্হ, শক্তিধর, ধরায় অতুল।
পাগল নহে তোমাদের এই সহচরী, সাক্ষ্য দিই,
মুক্ত দিগন্তরে জিব্রাইল দেখেছেন সে তিনিই।
অদেখা যা দেখেন ইনি ব্যক্ত করেন তখন তাই,
বিতাড়িত শয়তানের এ উক্তি নহে (কহেন খোদাই)।
তোমরা যবে অতঃপর কোন সেদিকে?
বাণীতে-যাহা কই,
বিশ্ব-নিখিল-শুভ তরে নয় তো এ উপদেশ বই!
এই উপদেশ তাহার তরে, তোমাদিগের মাঝ হতে
চলিতে যে চাহে আমার সুদৃঢ় সরল পথে।
নিখিল-বিশ্ব-অধিরাজের ইচ্ছা না হয় যতক্ষণ,
তোমরা ইচ্ছা করতে নাহি পারবে জানি ততক্ষণ।


সুরা তকভীর

তকভীর- আবরণ।

এই সুরা মক্কা শরিফে অবতীর্ণ হয়। ইহাতে ২৯টি আয়াত, ১০৪ টি শব্দ ও ৪৩৬টি অক্ষর আছে।

শানে-নজুল

কেয়ামত, পরকাল ও কর্মফল ভোগের কথা যখন হজরত মোহাম্মদ (দঃ) বলিতেন তখন মক্কাবাসীরা তাঁহাকে পাগল বলিত। কেয়ামতের ভীষণ ধ্বংসলীলা ও আল্লার শক্তির বর্ণনা দ্বারা তাঁহার প্রতি নির্ভরশীল হইয়া সৎকর্ম করিবার জন্য তাকিদ দিবার নিমিত্ত এই সুরা নাজেল হয়।