উৎসর্গ-পত্র

(স্বদেশী মেগাফোন-রেকর্ড কোম্পানীর স্বত্বাধিকারী)
আমার অন্তরতম বন্ধু
শ্রীজিতেন্দ্রনাথ ঘোষ
অভিন্নহৃদয়েষ্ণু-

বন্ধু! আমারে বাঁধিয়াছ তুমি অশেষ ঋণে,
দুঃসময়ের দুর্যোগ-রাতে দারুণ দিনে।
তোমার করুণা নির্ঝরিণীর স্রোতের সম
নামিয়া এসেছে রৌদ্রদগ্ধ মরুতে মম।
কে জানে, কোথায় তুমি মোর সাথী বন্ধু ছিলে,
আত্মার আত্মীয়রূপে তাই ধরা কি দিলে?
বিরাট তোমার প্রাণের ছায়ায় জুড়াতে পেয়ে
ঘুমন্ত মোর গানের বিহগ উঠেছে গেয়ে
তেমনি করিয়া, গাহিত যেমন প্রথম প্রাতে;-
দেবতার ছোঁওয়া পেয়েছি তোমার উষ্ণ হাতে।
তুমি যোগী, আমি বিয়োগ-বিধুর, আজ দুজনে
যোগ-বিয়োগের মিলন ঘটালে শুভক্ষণে।
বিত্ত তোমার রোধিতে পারেনি চিত্ত-গতি,
পর্বত বাধা ভেঙে চলে যেন স্রোতস্বতী।
রৌপ্য হয়েছে রূপের কমল পরশে তব,
আড়াল করিতে পারেনি তোমারে তব বিভব।
গানের সওদা করিতে আসিয়া তোমার দেশে,
ওগো অপরূপ সদাগর, প্রাণ দিয়াছি হেসে।
দিয়াছ অনেক, চাহনি কিছুই, করনি হিসাব;
বে-হিসাবী কথা কহি হর্দম, আমারো স্বভাব।
মিলিয়াছি ভালো বে-হিসাবী দুই বন্ধু মোরা,
গীতালির দেশে মিতালি মোদের স্বপ্নে ভরা। …
দেবতার ঋণ শুধিতে কি পারে মানুষ কভু?
‘গুল-বাগিচা’র পুস্পাঞ্জলি দিলাম তবু।

কলিকাতা
ফাগুন ১৩৩৯

সখ্য-ধন্য
নজরুল ইসলাম