আজ বিকেলে

মাঝেমাঝেই বুকের মধ্যে ঝনকে ওঠে
এখন এই পড়ন্ত বেলায়।
জানলাতে মুখ রেখে দেখি, দূরে কাছে
আকাশ জুড়ে বিষণ্ণতা ছড়িয়ে আছে,
মন বসে না কোনো কাজে, কোনো খেলায়।
মাঝেমাঝেই বুকের মধ্যে ঝনকে ওঠে
এখন এই পড়ন্ত বেলায়।

বুঝি না ঠিক কিসের জন্যে এতটা পথ
এমন করে ছুটে এলাম।
বুঝি না ঠিক কার বিরুদ্ধে এত যুঝি,
এই ধুলো-জঞ্জালের মধ্যে কাকে খুঁজি,
উড়িয়ে দিয়ে সকল পুঁজি কাকে পেলাম।
প্রশ্ন জাগে, কিসের জন্যে এতটা পথ
এমন করে ছুটে এলাম।

চিত্তে আমার অনিচ্ছা, হৃৎপিণ্ডে আমার
বিপন্নতা ঝনকে ওঠে।
সকল পথে ছড়িয়ে আছে কাচের গুঁড়ো,
ভেঙে পড়ছে সমস্ত মন্দিরের চুড়ো,
রক্ত ঝরছে সমস্ত মৌমাছির ঠোঁটে।
চিত্তে আমার অনিচ্ছা, হৃৎপিণ্ডে আমার
বিপন্নতা ঝনকে ওঠে।

অথচ সেই আগের মতোই ফুটছে শিউলি,
আগের মতোই বাতাস ছুটছে।
তবে কেন এই মাটি-জল আমার কি না।
স্পষ্ট করে বুঝে নিতে আর পারি না,
তবে কেন হাজার প্রশ্ন জেগে উঠছে?
আগের মতোই ফুটছে যখন শান্ত শিউলি,
আগের মতোই বাতাস ছুটছে?

মাঝেমাঝেই বুকের মধ্যে ঝনকে ওঠে
এখন এই পড়ন্ত বেলায়।
দিনের দীপ্তি মিলিয়ে যাবার খানিক আগে
বন্ধুদেরও মুখ দেখে আজ ধাঁধা লাগে,
মন বসে না কোনো কাজে, কোনো খেলায়।
বুকের মধ্যে বিষণ্ণতা ঝনকে ওঠে।
এখন এই পড়ন্ত বেলায়।

২১ কার্তিক, ১৩৭৭