তুমি

কী নাম তোমাকে দেবো, কোমলগান্ধার নাকি
বসন্তের অন্ধকারে পথ হারা পাখি?
‘কামনা তোমার নাম’ -বলতেই লজ্জামাখা আঁখি
তুমি ঢেকেছো আঙ্গুলে।

তারপর প্রেম এসে চুপিচুপি চুলে যেই বসেছে তোমার
‘বিদিশা বিদিশা’-ব’লে আমিও আবার
কাছে আসিয়াছি। তোমার দুরন্ত দেহে ছুঁয়েছি বকুল,
সমুদ্রের ঝড়ো রাতে অনায়াসে ভেসে যাওয়া খড়কুটো
পাপের আঙ্গুল তুমি ফিরালে না কেন?

তুমি কি কখনো চাও নাটোরের বনলতা হ’তে?
অথবা আমার রক্তে পদ্ম হয়ে ভাসতে মৃণাল?
কাছে এসে প্রিয়োতমা, কাছে এসো প্রিয়া…
ব’লে যেই নগ্ন হাতে ডেকেছি তোমাকে
তুমি কেন পরিপূর্ণ হৃদয় সঁপিয়া
প্রেমের দুর্বল লোভে ঝাঁপ দিতে গেলে
যৌবনের অনির্বাণ অসীম চিতায়?

কী নাম পছন্দ করো? পদ্মাবতী নাকি ক্লান্তি?
কী নাম তোমাকে দেবে? বলো, কোন, নাম!
যদি বলি তুমি লজ্জা, লাজুক পাতার মতো প্রিয়,
ম্রিয়মান, তবে কেন লাজ ভেঙে শিশিরের সামান্য ছোঁয়ায়
মধ্যরাতে জেগে ওঠো লজ্জাহীন হয়ে?

মাঝে মাঝে মনে হয় তুমিও ঘৃণার যোগ্য,
লাজহীন, অসুন্দর, ভীষণ কুৎসিত এক নারী।
লজ্জা নয়, আখি নয়, কোমলগান্ধার নয়,
বাসন্তী, বিদিশা নয়, ক্ষুধা কিম্বা ঘৃণা ব’লে ডাকি।

মাটির মূর্তির মতো ভেঙে ফেলি আঘাতে আঘাতে
ঠোঁট থেকে ফেরাই চুম্বন,
বাহুর বন্ধন থেকে ঠেলে দিই দূরে…

কে যেনো ফেরায় তখন, প্রতিবাদ ওঠে অন্তঃপুরে।
আমি বুঝি বড়ো লজ্জাহীন, কঠিন নির্মম এই খেলা
ভালোবাসা, কী নাম তোমাকে দেবো?
তুমিতো আমারই নাম, আমারই আঙ্গুলে ছোঁয়া
আলিঙ্গনে বদ্ধ সারাবেলা।