কথোপকথন ২৩

প্রেমে কেউ প্রাজ্ঞ হয়
কেউ কেউ প্রলাপেও ঝোঁকে।
শুভঙ্কর, তুমি ছিলে বুদ্ধিমান ও যুক্তিপ্রবণ।
তোমার চিঠির এই ছন্নছাড়া প্রগলভতা দেখে ভয় হয়
অনিশ্চয়তার জলে ডুবে থাকা দূর দ্বীপে ভেসে যেতে পারো।
এমন জাহাজে তুমি চেপে আছে যার
কম্পাসের কাঁটা আছে, দিকচিহ্ন নেই।

স্বীকার্য যে, কলকাতায় ঘিনঘিনে ভিড়।
স্বীকার্য যে কলকাতার স্থপতিরা কখনো গড়বে না
তোমার আমার রোজ দরকারের যমুনা বা কদম্বের বন।
স্বীকার্য যে, কলকাতায় নির্মাণের চেয়ে ধ্বংস বেশি।
কলকাতা রাবার ব্যান্ড, টানলে বাড়ে, না টানলেই
সংকোচপ্রবণ।
কলকাতা নষ্টের বীজ মেনে নেওয়া গেল।
কলকাতার গ্রামীনতা নাগরিক জড়োয়ার দরদাম শেখেনি এখনো
মানলাম তাও।

তাহলে এমন প্রেতলোকে
প্রশ্ন করো শুভঙ্কর,
কে তোমাকে শেখাল বা শিখলে কোনখানে
কলকাতা ডিঙানে প্রেম
কি করে বুনলে সামিয়ানা
কলকাতার আকাশের চেয়ে বড় বাসরঘরের?
কে জানাল প্রেম এক বড়
যার জন্যে সাতলক্ষ চুম্বন হারিয়ে বাঁচা যায়?
কলকাতা নিবীর্যবর্তী যদি
তবে তারই বংশধর তুমি
মুখে বৃহন্নলা কিন্তু রক্তে মাংসে কি করে অর্জুন?

(নন্দিনীর চিঠি শুভঙ্করকে ৭)