কথোপকথন ৩২

অমিতাভ,
গভীর খাদের জট-পাকানো অন্ধকার ছিঁড়ে একটা
পাথর কুড়িয়ে এনেছিলুম, সে তুই জানিস। ছেনি-হাতুড়ির ঘায়ে
তাকে গড়তে চেয়েছিলুম এমন এক নারী, দেখে মনে হবে
ঘুম ভেঙে এইমাত্র স্নান করে এল পৃথিবীর অগ্নিনির্ঝরে,
সেও তোর জানা। এর পরের ইতিহাস-

প্রথম ছেনির ঘা মেরেছি যেদিন, রক্তের ফিনকি। সারারাত
তার ক্ষতের উপরে হাত। তার শূন্যতার ভিতরে
সারাদিন জননীর মতো। যখন আর রক্তক্ষরণ
নেই, ক্ষত ভরে গেছে সবুজ পালকে, আবার ছেনি-হাতুড়ি
নিয়ে গড়তে বসা।

– কি পরাচ্ছ আমার গায়ে?
– আগুনের শাড়ি। যা তোমার আত্মাকে মানায়।
– আমার ভিতরে কিসের গন্ধ?
– রক্তে ছড়িয়ে দিয়েছিলুম আকাঙ্খার বীজ। ফুল ফুটছে সেই সব গাছে।
– আমার এই নতুন জন্মের জন্যে তোমাকে কৃতজ্ঞতা জানার কী দিয়ে?
– আমার ইচ্ছের পাপড়িগুলোকে কনকচাঁপা করে দাও।
– সে শক্তিও তো তুমিই দেবে আমাকে।
– এই নাও হৃৎপিণ্ড।

এর পরের ঘটনাটা খুব মজার। প্রাণ পেয়েই
ঘরের দরজা ভেঙে এক ছুটে বেরিয়ে সে গেল পৃথিবীর দিকে।
এখনো ফেরেনি। নিজের
হৃৎপিণ্ড হারিয়ে আমিই এখন গভীর খাদের পাথর।