লীলা

আমি শরৎশেষের মেঘের মতো
তোমার গগন-কোণে
সদাইফিরি অকারণে।
তুমি আমার চিরদিনের
দিনমণি গো-
আজো তোমার কিরণ-পাতে
মিশিয়ে দিয়ে আলোর সাথে
দেয় নি মোরে বাষ্প ক’রে
তোমার পরশনি-
তোমা হতে পৃথক হয়ে
বৎসর মাস গনি।

ওগো, এমনি তোমার ইচ্ছা যদি
এমনি খেলা তব,
তবে খেলাও নব নব।
লয়ে আমার তুচ্ছ কণিক
ক্ষণিকতা গো-
সাজাও তারে বর্ণে বর্ণে,
ডুবাও তারে তোমার স্বর্ণে,
বায়ুর স্রোতে ভাসিয়ে তারে,
খেলাও যথা-তথা-
শূন্য আমায় নিয়ে রচ
নিত্যবিচিত্রতা।

ওগো, আবার যবে ইচ্ছা হবে
সাঙ্গ কোরো খেলা
ঘোর নিশীথ-রাত্রিবেলা।
অশ্রুধারে ঝরে যাব
অন্ধকারে গো-
প্রভাতকালে রবে কেবল
নির্মলতা শুভ্রশীতল,
রেখাবিহীন মুক্ত আকাশ
হাসবে চারি ধারে-
মেঘের খেলা মিশিয়ে যাবে
জ্যোতিসাগর-পারে।

শান্তিনিকেতন । বোলপুর
২০ পৌষ ১৩১২