জৈষ্ঠী-মধু

আহা, ঠুক্রিয়ে মধু-কুল্কুলি
পালিয়ে গিয়েছে বুল্বুলি;-
টুলটুলে তাজা ফলের নিটোলে
টাত্কা ফুটিয়ে ঘুল্ঘুলি!

হের, কুল্ কুল্ কুল্ বাস-ভরা
শুরু হয়ে গেছে রস্ ঝরা,
ভোম্রার ভিড়ে ভীমরুলগুলো
মউ খুঁজে ফেরে বিল্কুলই!

তারা ঝাঁক বেঁধে ফেরে চাক্ ছেড়ে
দুপুরের সুরে ডাক ছেড়ে,
আঙ্রা-বোলানো বাতাসের কোলে
ফেরে ঘোরে খালি চুল্বুলি’।

কত বোল্তা সোনেলা রোদ পিয়ে
বুঁদ হ’য়ে ফেরে রোঁদ দিয়ে,
ফল্সা-বনের জল্সা ফুরুলো,’
মৌমাছি এলো রোল তুলি’

ওই নিঝুম নিথর রোদ খাঁ খাঁ
শিরীষ-ফুলের ফাগ-মাখা,
ঢুল্টুলে কার চোখ দুটি কালো
রাঙা দুটি হাতে লাল রুলি!

আজ ঝড়ে-হানা ডাঁটো ফজ্লী সে
মেশে কাঁচা-মিঠে মজ্লিসে;
‘রং-চোরা ফলে রস কি জাগালো’-
কুহু কুহু পুছে কার বুলি!

ওগো, কে চলেছে ঢেলা-বন ঠেলে
বুল্বুলি-খোঁজা চোখ মেলে,
জাম্রুলী-মিঠে ঠোঁট দুটি কাঁপে,
তাপে কাঁপে তনু জুঁইফুলী!

মরি, ভোম্রা ছুটেছে তার পাকে
হাওয়া ক’রে দুটো পাখনাকে,-
ফলের মধুর মর্সুম যাপে
ফলের মধুর দিন ভুলি’!