কে

চির-চেনার চমক নিয়ে চির-চমৎকার
নতুন দুটি ভ্রমর-কালো চোখে
কে এলে গো হোরার মেলায় দৃষ্টি-অলঙ্কার
বৃষ্টি ক’রে পুলক স্বর্ণালোকে!

কে এলে গো!…অশোক-বীথির ছায়ায় ছায়ায় আজি
নিঃশ্বাসে পাই তোমার নিশাসখানি।
পদ্মগন্ধা কে সুন্দরী জাফ্রাণে মুখ মাজি’
হাওয়ার পিঠে গেলে আঁচল হানি’!

সৌরভে তোর বিভোর ভুবন মগজ সে মস্গুল্,
ধূপের বাতি আগুন হ’য়ে ওঠে,
অগুরু-বাস আগুন-উছাস বিহ্বলে বিল্কুল্,
সংজ্ঞাহারা বকুল ভূঁয়ে লোটে।

শামার শিসে কোন্ ইসারা করিস্ গো তুই কারে-
মন গোপনে ওঠে কেমন ক’রে,
চির-যুগের বিরহী ধায় তোমার অভিসারে
অশ্রু-মুক্তা-অর্ঘ্যে দু’হাত ভরে।

চাঁদের আলোর রাজ্যে রাণী তুমি চাঁদের কোণা,
মর্ত্তজনের চির-অধর তুমি,
স্বর্গ তোমার প্রসাদ-হাসি, স্বপ্নে আনাগোনা,
মূর্চ্ছে তৃষা তোমার আভাস চুমি’।

আনন্দে তোর নিত্য-বোধন, পূজা শিরীষ-ফুলে,
আরতি তোর আঁখির জ্যোতি দিয়ে,
রিক্তা তুমি সন্ধ্যা-মেঘের রক্ত-নদীর কূলে,
পূর্ণা তুমি প্রাণের পুটে প্রিয়ে!

পারিজাতের পাপ্ড়ি তুমি ইন্দ্রেরি উদ্যানে,
রাঙা তুমি এক্শো হোমের ধূমে,
তপ্ত সোনার মূর্ত্তি তুমি নিদাঘ-দিনের ধ্যানে,
স্ফুৰ্ত্তি তোমার পদ্মরাগের ঘুমে!