প্রেরণার প্রতীক্ষায়’

কবিতা কখনো ছিপছিপে নাও, গহীন গাঙের
ঢেউ ছুঁয়ে ছুঁয়ে কী সহজে ব’য়ে যায়। কখনো-বা সেই নাও
ধূসর চড়ায় ঠেকে হয় রুদ্ধ গতি। কিছুতেই
চালানো যায় না লগি, বৈঠা
বাওয়া ভার, পাল খাটাবার
ইচ্ছা নিরর্থক; নিচে নেমে শত ঠেলাঠেলি ক’রে
শ্রান্ত হওয়া ছাড়া উদ্যমের অন্য কোনো
পরিণতি নেই। কবিতার মতিগতি বোঝা দায়।

ভালো ফলনের পর কৃষক যেমন উল্লাসের ডানা পেয়ে
আকাশে উড়তে থাকে, তেমনি কবিও
বেশ ক’টি কবিতা সহজে লিখে ফেলে
আনন্দে বিভোর। প্রেরণার অনটনে কবি তার
লেখার টেবিলে ব’সে থাকেন সর্বক্ষণ,
যদি সরস্বতী ডানা-অলা পরী হ’য়ে মধ্যরাতে
মাথার পিছনে তার উড়ে আসে, যদি অতীতের
কোনো কবি তার কানে-কানে জপান সিদ্ধির মন্ত্র।

প্রেরণা নারীর মতো লাস্যময়ী এবং চঞ্চলা,
যখন তখন তার নূপুরের ধ্বনি
কোথাও ওঠে না বেজে। কে যেন কোথায় বলেছেন-
প্রেরণার প্রতীক্ষায় তুমি ব’সে থেকো না অনড়, আশা জ্বেলে
চোখের ভেতর তাড়াতাড়ি বাইরে বেরিয়ে পড়ো,
হঠাৎ বিজন পথে বিংবা ভিড়াক্রান্ত ফুটপাথে তার সাথে
দেখা হ’য়ে যেতে পারে দৈববলে, যেমন গৌরীর
সঙ্গে হলো মিলন তোমার সিকি শতাব্দীর পর।

১৪/১২/৯৫