মিলন দিগন্ত

কাছাকাছি ফিরে আসা দু-জনের বেদনা বাতাসে
ওদের সে দূর কাছে আসে;
যে-দূর দু-জনে গেঁথে বছরে-বছরে বহুদিন
দুই তীরে ভরেছিলো বিচ্ছেদের নিরম্ভে বিলীন।
পাশের বাড়ির কান্না, বৃষ্টিছাঁট অস্পষ্ট সকালে,
প্রত্যহের লগ্ন সারি, কত বোধনের জালে-জালে
বুকে-বুকে গড়া এক চিরাগ্নি বৃত্তের স্তব্ধতায়
যেন মৃত্যু ধোওয়া দোঁহে ফিরে পায়।
কত ট্রেনে চলেছিলো, টাইম-টেবিলে ঝাপ্‌সা চোখে
জল মুছে যাত্ৰা সেই মানসের, কল্পলোকে
চেনা হাতে চিঠি লেখা হঠাৎ প্রত্যক্ষ বুকে নিয়ে
উত্তর-না-পাওয়া বেলা, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পারে গিয়ে
রোদ্দুরের এক রাত্রি সমুজ্জ্বল কোন আপনতা,
বাহুডোরে দু-জনায় খোঁজে সেই ডুবে-যাওয়া কথা।।

কাছে-আসা দৈব বেলা লুকোয় কোটির কত দাবি
সাধ্য নেই মিলনের, সম্পূর্ণের পূর্ণতায় নাবি
দেবে যে দু-জনকে সেই অত বছরের ক্ষুধাভরা
সমস্ত বৃহৎ বিশ্ব, দু-জনার সত্তায় অক্ষরা।
বারে-বারে ভর ভর চোখে তাই, নত চেয়ে জানে
যুগ্মতা মিলনাতীত, আনন্দের বিদীর্ণ সন্ধানে-
নির্নিমেষ উদ্বোধিত এক চেতনায় পরস্পরে
দু-জনকে বিশ্বপ্রতীকের সাক্ষী করে;
চূর্ণ বসন্তের নীল ক্ষণে
দিনধারণার বেশি বিস্মরণে
হঠাৎ প্রাঞ্জল মুগ্ধ আলিঙ্গনে বুঝি ওরা শেষে
সমস্ত অর্পিত সত্যে মেশে।।