গান্ধী মহারাজ

কে ঐ চলে বিপুল বলে
সমুখ পানে চাহি’-
উদার ধীর অতি গভীর
চোখে পলক নাহি;
সরল পথে সহজ মতে
সমান ঋজু গতি,
ডানে বা বামে কভু না থামে
জানেনা লাভ ক্ষতি;
ব্যথিত লোকে, অভাবে শোকে
সেবিতে সদা মন,
দীনের তরে নয়ন ঝরে
করে পরাণ পণ;
পরের লাগি’ সর্বত্যাগী
ভুলিয়া ভয় লাজ!
কেবা এ জন? হাঁকে পবন-
গান্ধী মহারাজ!

ভারতবাসী গৃহী ও চাষী
কাহার মুখ চাহি’
নবীন বলে মাতিয়া চলে
আশার গান গাহি’;
মজুর কুলি
অভাব ভুলি’
কাহার জয়গীতে,
পরাণ মন জীবন পণ
চাহে বা বলি দিতে;
ধনী ও মানী গুণী ও জ্ঞানী
গরীব গৃহহীন,
কাহার কাছে শরণ যাচে
শুধিতে নারে ঋণ;
নিখিল লোক মেলিয়া চোখ
নমিছে কারে আজ?
দেশ-মাতার কণ্ঠহার
গান্ধী মহারাজ!

পরের প’রে আশা না ধরে-
নিজেতে নির্ভর,
সুসমাহিত শান্ত চিত
শুদ্ধ কলেবর;
সরল বাস সহজ ভাষ
সত্যপথকামী,
দেশের হিত কাহার চিত
ভাবিছে নিন.যামি;
বিরোধী ভায়ে মায়ের পায়ে
মিলায়ে নিজ গেহে,
সবারে ডাকি’ মিলন-রাখী
পরা’ল কে বা স্নেহে;
হিন্দু টানে মুসলমানে
নিজ বুকের মাঝে-
অসাধ্যকে সাধিল ওকে
গান্ধী মহারাজ!

অমিলে কে সে মিলায় হেসে
অচলে করে চল,
কাহার চিৎ শত্রুজিৎ
অস্ত্র হৃদবল;
আসহযোগে মৃত্যুরোগে
নিত্যবিধি কার
ফিরায়ে আনে দেশের প্রাণে
বাঁচার অধিকার;-
যে বাঁচা মানে সকলে জানে
স্বাধীন যত দেশে,
কারার পথে লোহার রথে
যাত্রা যার হেসে;
যে বাঁচা মানে বিধাতা জানে
অমৃতলোকমাঝ-
এ বাণী কে সে শিখা’ল দেশে?
গান্ধী মহারাজ!