অকৰ্ম্ম

দণ্ড দুয়ের কাণ্ড সুধু- সংসারে এই সং সাজা,
পণ্ডিতে কয়- মিথ্যা সবি; সন্ন্যাসী বা হোক্ রাজা-
চিত্ত সবার প্রার্থী সুখের; সুদ্ধ তারি আশ্বাসে,
ঘূর্ণীবেগে ঘুরছে সবাই ভ্রান্ত মনের বিশ্বাসে!

ধৰ্ম্ম বল’ কৰ্ম্ম বল’- ভণ্ডামি সব জুচ্চুরি,
চক্ষু মুদে’ আসবে যখন, খোঁজ থাকেনা কিচ্ছুরি;
স্পষ্ট চোখে দেখছে লোকে- সঙ্গে কিছুই যাচ্ছে না,
জন্ম ভরে’ কৰ্ম্ম করে’ ফল কোন তার পাচ্ছে না।

দেখতে বড় শুনতে বড় স্বার্থত্যাগের কল্পনা,
মন-ভুলান’ ভেল্কি শুধু লোক-ঠকান জল্পনা;
মৃত্যু এসে এক নিমেষে সম্জে দেবে- সত্য যা,
ধৰ্ম্ম তারে ধরত যদি- মর্ত কি সে? মরত না!

বলছ মুখে কৰ্ম্ম গীতা- কৰ্ম্মযোগের অন্ত নাই,
কৰ্ম্মতভাগের সুখ কি শুনি- জন্ম ত যায় যন্ত্রণায়;
কৰ্ম্ম লাগি’ জন্ম যদি, চট্ করে’ তা টুট্তো না;
কর্মফলে জন্ম হলে’ ফুলটি তারো ফুট্তো না।

মিথ্যা সবি ফক্কীকারী, ফুর্তি শুধু মিথ্যা নয়,
অর্থ তাহার বুঝতে পারি, ভোগটা যে তার মর্ত্ত্যে হয়!
হাস্য করি নৃত্য করি- দিব্যি খাসা প্রাণ ভরে’
খাদ্যে-পানে পেটটি ভরে’ জন্ম কাটাই গান করে’।

পুষ্প করে গন্ধে বিভোর- চক্ষু ভুলায় বর্ণ তার,
কর্ণ জুড়ায় বাদ্যগীতে, স্ফূৰ্ত্তি যে তার কর্ণধার;
মদ্য মিটায় সদ্য তৃষা, মাংস স্বাদে মন হরে,
মুগ্ধ প্রিয়ার দ্রাক্ষা-অধর স্বর্গ ভুলায় মন্তরে।

ফুলটি ফুটে মৌন-মধুর- বল্ত কি তার কর্ম্ম ভাই,
ঝরণা ছুটে মক্ত-মুখর, ধৰ্ম্ম কোথায়? ধৰ্ম্ম নাই!
চাঁদটি উঠে জ্যোৎস্না ফুটে, অর্থ কি তার- হাস্য সার।
গন্ধ লুটে মন মলয়- আর কিছুনা, লাস্য তার।

বিশ্ব যুড়ি’ স্ফুর্তি-মেলা- কৰ্ম্ম সে ত যন্ত্রণা,
ক্ষিপ্ত যারা নিত্য শুনায় কৰ্ম্ম-পথের মন্ত্রণা।
দুঃখে-দায়ে রাত্রে-দিনে অশ্রুগলদ্ঘর্ম সাজ,
বৃষ্টি-ঝড়ে রৌদ্রে-শীতে মূর্খে করুক কৰ্ম্ম-কাজ।

ভবিষ্যতের দাস্য করে- দৃষ্টি তারি অদৃষ্টে,
অনিশ্চিতের পোয্য যারা, চিন্তা তারি অনিষ্টে!
চিত্তসুখের নিত্য সেবক স্ফুর্তি মোদের সব কাজে,
বর্ত্তমানের শিষ্য মোরা- আজকা মোদের আজকা যে!

ভাব্না বটে অর্থ চাহি- পাওনা কিছু শক্ত যার,
দুর কর ছাই- কর্ব্বে যোগাড়- যেম্নে পারুক, ভক্ত তার,
চক্ষু বুঁজে’ বুদ্ধি করে’ আনলে পরেই শুদ্ধ তা,
শুদ্ধ আমোদ দেয় যে তা’তে- সেওত কিছু বুদ্ধ না!

স্ফুর্ত্তি কর স্ফূর্ত্তি কর প্রত্যহ ও প্রত্যেকে,
আজকে আছি আজ ত বাঁচি- অন্য কথা ভাবছে কে?
মূর্খ থাকুক কৰ্ম্ম নিয়ে- ধর্ম্মে দিয়ে মন বাঁধা,
সত্য ছেড়ে মিথ্যা তেড়ে ধরতে যাবে কোন্ গাধা?