১৯৪০’এর স্মৃতি

ঐখানে পর্বতের মতো এক মাটির ঢিবির পারে ধীরে
এক ফোঁটা আধ ফোঁটা রাত্রি লাগে সূর্যের শরীরে
সমস্ত নির্যাস ফিকে মুখ তুলে চেয়ে আছে আমাদের পানে
বিশ্বস্ততা হয়তো-বা আমাদের প্রাণে

সিংহর মুখের মতো একাকী একটি রং চুপে
বহু ক্ষণ ধ’রে প্রকাশিত হয়ে আছে মেঘ-রূপে
তবু তার মুখ ভেঙে বার হয় ঠাকরুণ, বানর, বিড়াল
অথবা ফাঁসির-দড়ি নিয়ে যেন কেউ কিছু কাল

প্রান্তরের পথে সঙ্গী আমিও নীরবে তার হৃদয়কে নিয়ে
মানুষ যতটা দূর যেতে পারে এসেছি এগিয়ে
তার পর কেউ নেই- কেউ নেই ব’লে প্রকৃতির বুকে নেই কোনও ক্ষোভ
কারু প্রাণে নেই এই কনে-দেখা বিকেলের লোভ

তবুও সকলে এই ছটকানো বিকেলের রঙের ভিতরে
মাটির ভিতরে কোনও লুপ্ত সোনা রয়ে গেছে অনুভব করে
হয়তো তা নারী, প্রেম, পরলোক,- মানুষের মন
ব্যতীত কোথাও আছে কী মনপবন

মনে হয় এ-রকম বিকেলের নিমীল বাতাসে
ঢের স্নেহময়ী ভূত মানুষের মুখ দেখে হাসে
বিড়ালের থাবার মতন যেন তাদের হৃদয়
এক-আধটা গাছের শীর্ষে জেগে রয়।

ফস্কা-গেরোর থেকে তবুও খোলে না কোনও ফাঁস
মানুষের কাছে এসে কখনও করে না তারা আত্মপ্রকাশ
একাকী ফাঁসির-দড়ি হাতে নিয়ে গোধূলির উঁচু গাছে ঝুলেছি যখন
ঝুলেছি এমন
তখন বুঝেছি তবু- কেউ নেই- মানুষের হৃদয়ের তরে
সূর্যাস্তের পানে চেয়ে মেঘের ভিতরে
শাশ্বত চিন্তার মতো এই স্বাভাবিকতাকে মনে পড়ে।