আদিম দেবতারা

আগুন বাতাস জল: আদিম দেবতারা তাদের সর্পিল পরিহাসে
তোমাকে দিল রূপ-
কী ভয়াবহ নির্জন রূপ তোমাকে দিল তারা;
তোমার সংস্পর্শের মানুষদের রক্তে দিল মাছির মতো কামনা।

আগুন বাতাস জল: আদিম দেবতারা তাদের বঙ্কিম পরিহাসে
আমাকে দিল লিপি রচনা করবার আবেগ:
যেন আমিও আগুন বাতাস জল,
যেন তোমাকেও সৃষ্টি করছি।

তোমার মুখের রূপ যেন রক্ত নয়, মাংস নয়, কামনা নয়,
নিশীথ দেবদারু দ্বীপ;
কোনও দূর নির্জন নীলাভ দ্বীপ;

স্থূল হাতে ব্যবহৃত হয়ে তবু
তুমি মাটির পৃথিবীতে হারিয়ে যাচ্ছ;
আমি হারিয়ে যাচ্ছি সুদূর দ্বীপের নক্ষত্রের ছায়ার ভিতর;

আগুন বাতাস জল: আদিম দেবতারা তাদের বঙ্কিম পরিহাসে
রূপের বীজ ছড়িয়ে চলে পৃথিবীতে,
ছড়িয়ে চলে স্বপ্নের বীজ!

অবাক হয়ে ভাবি, আজ রাতে কোথায় তুমি?
রূপ কেন নির্জন দেবদারু দ্বীপের নক্ষত্রের ছায়া চেনে না-
পৃথিবীর সেই মানুষীর রূপ?
স্থূল হাতে ব্যবহৃত হয়ে- ব্যবহৃত- ব্যবহৃত- ব্যবহৃত- ব্যবহৃত হয়ে
ব্যবহৃত- ব্যবহৃত-
আগুন বাতাস জল: আদিম দেবতারা হো-হো ক’রে হেসে উঠল:
‘ব্যবহৃত- ব্যবহৃত হয়ে শুয়োরের মাংস হয়ে যায়?’

হো-হো ক’রে হেসে উঠলাম আমি!-
চার-দিককার অট্টহাসির ভিতর একটা বিরাট তিমির মৃত দেহ নিয়ে
অন্ধকার সমুদ্র স্ফীত হয়ে উঠল যেন;
পৃথিবীর সমস্ত রূপ অমেয় তিমির মৃত দেহের দুর্গন্ধের মতো,
যেখানেই যাই আমি সেই সব সমুদ্রের উল্কায়-উল্কায়
কেমন স্বাভাবিক, কী স্বাভাবিক!