এইখানে প্যাকাটির মতো

এইখানে প্যাকাটির মতো সব
ধঞ্চের গাছগুলো- দাঁড়ায়ে রয়েছে আজও, আহা
পাশে নদী- রুগ্ন প্রসূতির মতো চলে
এইখানে
গত-বছরের এক নরম অঘ্রানে
পড়ন্ত রোদের মাঠে- মিঠা মৃদু ঘাসে
বিকেলবেলার এক বিশাল আকাশে
আমরা ক’ জনে
বনভোজনের সঙ্গী এই মাঠে বনে
সোনালি রোদের ঢেউয়ে মাছির মতন শিহরনে
খেলা ক’রে গেছিলাম

আজও এক নরম অঘ্রান
আজ আমি একা শুধু আসিয়াছি
সেই মেটে কালো হাঁড়ি
কাঠের সে রুখু খুন্তিখান
সেই ভাঙা উনুনের মাটি
পোড়াকাঠ- কয়েকটা রিক্ত কলসি বাটি
মাটির গেলাস
বাদামি রঙের দগ্ধ ঘাস
আজও আছে এখানে ওখানে ছড়ায়ে
নীরব আচ্ছন্ন পায়ে
হেঁটে-হেঁটে দেখি

আজও এক নরম বিকেল
মাঠে-মাঠে প্রচুর অঘ্রান
গত-বছরের সেই স্থান
আজ তবু অমেয় নীরব
কয়েকটা সুদর্শন ডেকে উড়ে গেছে
গাঙচিল ডেকে গেছে- এই- এই সব
চড়ুইভাতির মাঠ বিষণ্ন নীরব

দুই জন পেয়ে গেছে সরকারি কাজ
লখ্নৌয়ে বেরিলিতে আছে তারা আজ
খিদিরপুরের ডকে এক জন আছে
বাকিটি- সে- নারী- আহা- হয়তো এ ধর্মেতর গাছে
বাতাসে ভাসিছে তার প্রাণ
গত-মাঘে মারা গেছে
হয়তো ভোলে নি আজও এই বনভোজনের স্থান…
শোনো তার গান
ধঞ্চের গাছে-গাছে মর্মর- মর্মর
হয়তো-বা বাতাসের স্বর।