গভীর নিশীথে আমি

গভীর নিশীথে আমি সময়কে গুনে যাই যখন নীরবে
লৌকিক ঘড়িতে কিছু- বাতাবি’র ডাল থেকে হঠকারিতায়
শিশির ঘাসের ‘পরে ঝ’রে গিয়ে ব’লে যায় ত্রিযুগের পেঁচা
তোমারই নিকটে আছে- আরও কাছে- এখন কোমল
মাংসল বাঁ পায়ের নখ তুলে একটি পরিধি
গভীর পরিধি এক এঁকেছে সে নক্ষত্র ও নির্জন মাটির
ব্যবধান বেছে নিয়ে (অর্থময়) গুণীর মতন অন্তঃসারে
গভীর শীতের রাত- প্যারাফিন আলোর প্রদীপ
নিভে গেছে মানুষের; টেবিলের মূঢ় কাঠে বৈবস্বত মনু
আবার সমুদ্র পাড়ি দিয়ে সব আধুনিক বইয়ের বন্দরে
অকৃত্রিম, অনলস আঁধারকে দেখে যায় (মনে হয়) সৃষ্টির আদিম
অলোকসামান্য কথা অন্ধকার- শীত- স্থিতি পরিধির মতো
ঘুরে গিয়ে শেষ কথা শেষ করে- প্রণয়িনী পাখিনির সাথে
নাতিশীত পেঁচা তবু এক ধনু দূরে এক পিপুলের ডালে
ব’সে আছে- পউষের নীল মেঘ, নদী, তারা, লোষ্ট্রের ভিতর
আমার মৃত্যুর মুখে প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে মোম তুলে
কুহুট- টুহুন- টুহু- গান গায়- ঝাঁপশালি নদী
(দু’ পারের উঁচু-উঁচু গাছদের অন্ধকারে ফুসলায়ে রেখে)
অন্ধকার নিশীথকে ফুসলায়ে স্থির ক’রে রেখে
স্থিরতর নদী হল- কুয়াশার থেকে উঠে আঙুল ঘুরায়ে
প্রান্তরের রেখাগুলো বিশ্বাসীর মতো চোখ বুজে
থুয়েছে মন্থর ঘাসে নিজেদের; মৌরি’র ফুল
অথবা শিশির ব’লে আকাশের সংসর্গ এখন
আকাশকে চুমো দেয়- শতাব্দী নিজের স্বাদে শেষ হয়ে গেলে
শান্তি আসে- নবীন জন্মের কথা হৃদয়ে গভীরতর হয়।