জীবনে আমার এই অনুভূতি

জীবনে আমার এই অনুভূতি হয়েছিল এক দিন- হয়তো-বা আজও
রয়ে গেছে- এই অনুভূতি- এই- কোনও এক স্থির মানুষের
হাতের তালুতে জল- অন্ধকারে- নদীদের মতো
সেই মানুষের চোখে দেয়ালের ফাটলে যে-বোবা মহীনতা
দেখা দেয়- তা-ও অরণ্যের মতো সুধী- বাতাসে জোনাকি
সক্রিয় স্বাতী’র মতো আপনার দেশ
সৃষ্টি করে- বস্তুতই সরমা সে- স্বাতী’র মতন
তাই আমি হেমন্তের বিকেলের আলোকের পথে
আমার পায়ের নিচে (এক গাড়ি) বিবর্ণ শনের
পরিমাপ চিনে নিই- একটি তিতির
চমকিত ক’রে আমি যেন এক বড়ো নগরীকে
নেড়ে দিই- যে-সব মানুষ মাঠে গর্ত খুঁড়ে উদের মতন
উদ্বিড়ালের মতো ঘুরে যায় সময়ের নদীর ভিতরে
শরীরের- হৃদয়ের- প্রয়োজনে যারা আজ উভচর জীব
আমার বুকের ‘পরে হাত রেখে তাহাদের আমি
মানুষের মতো তবু অনুভব ক’রে নিই- বিংশ শতকের
লন্ডন মস্কৌ দিল্লি কলকাতা হঙকঙের হোমা মাইক্রোফোন
তাহাদের কাছে আজও জনশ্রুতি- তা-ও নয়-
সেই সব ধূমাময় জনতার থেকে
কোথায় পৃথক তবু অকিঞ্চনে এরা আজ- মানুষের ভিতরে হৃদয়ে
যখন নিমীল জন্তু বাস করে- পোষ মানে- চাল-কড়ি পেলে
দু’-এক মুহূর্ত তার মনিবের কথা ভাবে অমায়িকতায়
তার পর চঙ্গ বেয়ে ধীরে-ধীরে নক্ষত্রের দিকে
উঠে যায়- অথবা কোথাও কোনও ঊর্ধ্ব নেই, অধঃ নেই ব’লে
নীরবে থেমেছে এসে অন্ধকার কর্নিসের ‘পরে
কোনও এক সমীচীন, মহীয়ান, স্তব্ধ নরকের।