যদিও সে নেই আজ

যদিও সে নেই আজ- তবু তার মুখের ভিতরে
সুদীর্ঘ রৌদ্রের দিন চেয়ে দেখে আমি
এক বার বাতাসের সাহচর্যে প্রান্তরের দিকে চ’লে যাই
তার পর বহু ক্ষণ টেবিলের কাছে এসে থামি

কলম গুটায়ে নিয়ে তবু তার পর তার কথা
ভেবে যাই- ভোর হলে যে-মানুষ নদীর ভিতরে
হয়তো আর-এক জল দেখেছিল- হয়তো আর-এক গোল রেখা
আমাদের অগোচর অপর সূর্যের মতো অভিভূত ক’রে।

তবু এই পৃথিবীর ধূসর- ধূসরতর সূতির কাপড়ে
তাকে দেখা যেত রোজ- প্রতিটি নতুন ভোরে রয়েছে দাঁড়িয়ে
নদীর কিনারে একা ছিপ হাতে নিয়ে
সময়ের ঘড়িকে হারিয়ে

নদীর উচ্ছল জল ঘোড়া’র রোমের মতো ফিকে।
অথবা জলের ঢের বিষয়ান্তর সারা-দিন।
কতগুলো মেঘ এসে সূর্যকে ঘিরে
অন্ধকার ক’রে রাখে- তবু এক মেধাবী, প্রবীণ

যুগপৎ পৃথিবীর ছোট বড়ো নদীর নিকটে
হেঁটে যায়- কখনও-বা ডোরাকাটা জামার ভিতরে
বাতাসের ঝাঁপি নাচে- ব্যস্ত থাকে নদী সারা-দিন
বৃহৎ মাছের মতো- সপ্রতিভ লোকটার তরে

অনাবিল মেঘগুলো ভেসে আসে নগরীর হ্যান্ডবিল খেয়ে
নদীর কিনারে কোনও লুকানো দেয়ালে
তাহাদের হাত চুপে ঠেকে গিয়ে থামে
মাথার উপরে তারা আমলকী-ডালে

লেগে আছে- এই সব বিষয়ের ব্যাপ্ত নীরবতা
ফাল্গুনের মাঠে রৌদ্রে দিন আরও দীর্ঘতর হলে
যে-মানুষ নেই, তাকে পাওয়া যায়- হৃদয়ের প্রেম অভিজ্ঞতা
মরণের চেয়ে তবু আরও স্থির, বিচক্ষণ ব’লে।