কাঠুরিয়ার হাতে

কাঠুরিয়ার হাতে নিজেদের সমর্পণ ক’রে
অরণ্যের তরু সব প্রভাতের নদীর কিনারে
দাঁড়ায়ে রয়েছে আজ;
আমরা দাঁড়ায়ে আছি
জলের ভিতরে আমাদের খানিকটা প্রতিবাদ বিম্বিতেছে
কর্তিত দেহের ছবি ক্রমে-ক্রমে ফুটিতেছে তবু
এক দিন হস্তমুণ্ডহীন আমাদের অনুত্তীর্ণ দায়িত্বহীনতা
নিশীথের নক্ষত্রের নিচে- অবশেষে
আরও স্পষ্ট বিদূষক হবে
আমাদের জীবনের এই পরিণতিহীন অন্ধকার প্রবাদকে টিটকারি দিয়ে
শূন্যতায় স্তব্ধ হয়ে র’বে
মরণের আগে আমাদের মৃত্যু হয়ে গেল
হলুদ পাতারে দিল না আসিতে
পাখিদের ভালোবাসা- আশা- দাম্পত্যের নীড়
আমাদের স্পর্শে এসে অসুস্থতা পেল- রোধ- মৃত্যু-
প্রভাতের জলের তরঙ্গ আপনারে প্ররোচিত মনে ক’রে
আমাদের শুষ্ক শিকড়ের দিকে চেয়ে
পৃথিবীর জলের জননী হতে বাধা পাবে না ক’ তবু
সকল গভীর ক্ষত প্রশমিত ক’রে, সব উপদংশ
স্নিগ্ধ ক’রে;
আবার সে শিশুশাখারূপে আপনারে প্রকাশিবে-
সূর্যের সোনালি ডিম্বে,- নক্ষত্রের;
অতিকায় মৃত কাঁকড়ার মতো
আমাদের ঘনসন্নিবিষ্ট শুষ্ক শিকড়ের রাশি
মৃত্তিকায় মিশে যেতে-যেতে ভৌতিক বাতাসের মতো শান্ত দূর শব্দে ব’লে যায়
‘প্রতিভার নতুন প্রসার নিয়ে
তোমাদের মৃতোপম চোখের উপরে
নিশীথের বায়ু স্ফীত হয়ে উঠিতেছে’