নীলাভ আলোক

স্টোভের ভিতর থেকে নীলাভ আলোক এসে আমাদের সকলের মুখ
খানিকটা ছুঁয়ে দিয়ে স্থির হয়ে লেগে আছে এইখানে
এক্ষুনি সে নিভে যাবে- হেঁয়ালির মতো গোল কয়েকটা পেয়ালার ভিড়
হাতে-হাতে ন’ড়ে গিয়ে অন্ধকারে তাহাকে স্তিমিত ক’রে দেবে।
দেয়ালে কাঠের ঘ্রাণ কোনও এক মৃত অরণ্যের।
এমন দেয়াল সব; মানুষের হাতে গ’ড়ে জেগে উঠে পাখিদের ফুঁয়ে
ধ’সে যায়। বাহিরে শীতের রাতে বিলোল মিনার এক
আমাদের জানালার পথে এসে আপনার কাজ নিয়ে দাঁড়ায়েছে
স্তম্ভের ও-পারে ঢের নক্ষত্র রয়েছে, জানি, অনেক নগরী আছে
আমাদের হৃদয়ের পরিজন; শীত-রাত, নিস্তব্ধতা, সিংহ, অন্ধকার।
র’য়ে গেছে; স্টোভের করুণ আলো উদ্গীরিত হয়ে যায় নীল বিন-ফুলে
গর্ভকেশরে নেমে একটি মাছির এক গুঞ্জনের মতো
থেমে যায়। তবু তার প্রতিধ্বনি পৃথিবীর ধমনীর শব্দের মতন
আমাদের ধ’রে রাখে বহু ক্ষণ প্রসারিত রাত্রির ভিতরে
দিকে-দিকে মানুষেরা কথা বলে- কাজ করে। অন্ধকার, শীর্ণ গলিপথে
কোথাও একটি গাছে পাতা নাই, শাখা নাই, কাঠ শুধু আছে
অথবা একটি পাতা শীতের হাওয়ার রাতে নরকের থেকে উড়ে এসে
ঘুরে-ঘুরে কেবলই যেতেছে ঘুরে অমর গাছকে ভালোবেসে।