নিশীথের বাতাস

আমাদের তরে নিশীথের বাতাসের শেষ কথা নয়
আমাদের শিশুরাও এক দিন বড় হয়ে উঠে
সমুদ্রের অই পারে দূর চক্রবাল কুয়াশাকে মুহূর্তের হৃদয়ের বস্তু ব’লে জেনে
ব্যথা পাবে;- অন্য এক লালসায় আন্দোলিত হবে
সমীচীন ভিড় ছেড়ে ন’ড়ে উঠেছিল ব’লে তিরস্কৃত হবে
চক্রবাল তাহাদের তরে নয়
যখন পাহাড় থেকে দু’-চারটে পাথর কুড়ায়ে আনি চুপে-চুপে- কোনও এক ভোরবেলা
তারা প্রতিবাদ করে না ক’;- মনে হয় তবু যেন আমারে একাকী পেয়ে
তারা মৃদু হাসে- নীলিমা ও মৃত্তিকার মাঝখানে নিজেদের জীবনের পরিব্যাপ্তি ভুলে গিয়ে
অনেক অচিন্তনীয় কথা ভেবে; আমার এ-জীবনের
তুচ্ছ সব অভিপ্রায় কর্তব্যকে ধ’রে ফেলে
নিজেদের গোপনীয় অপরূপ পারঙ্গম ব’লে জানে তারা
আমার এ সাময়িক মানবীয় হাতে তাদের ধর্ষণ নাই জানে সব
মসৃণ- পবিত্র- পীত শুয়ে আছে রৌদ্রের ভিতর
তাহাদের তুলে নিই ধীরে-ধীরে বিস্ময়ের ভয়ে
যেন কোনও অধিকার ছিল না ক’-
যেন কোনও বালকের চক্ষুষ্মন (স্মিত) কৌতূহল
মিটাতে এসেছি আমি স্থূলতায়- মহনীয় স্তব্ধতার এই দেশে
থেকে-থেকে উঁচু-উঁচু তরুদের বুক থেকে ভ্রাম্যমাণ
বাতাস চলিয়া যায় আন্তর্নাক্ষত্রিক শূন্যে
আকাশ ছড়ায়ে আছে নীল হয়ে আকাশে-আকাশে
সময়ের পার্শ্বচর এরা সব
যেন কোনও পরিষ্কার দায়িত্বের কাজে আশা আছে- সাধ আছে ইহাদের
যেন কোনও ঘূর্ণমান অন্ধকার গ্রহ
এই সমুড্ডীন পৃথিবীরে আপনার অর্থহীন ভ্যাগাবন্ড হৃদয়ের সহোদরা ভেবে
অন্ধকার আলিঙ্গন দিতে আসিবে না
যত দিন এই সব পাথর, পাহাড়, এই ভোর, মেঘ, এই সব আশ্চর্য বায়ুর দীপ্তি
রয়ে গেছে; আমি এই পাহাড়ের কোনও এক দ্বিধাহীন কাজে রত বলয়িত কিনারে দাঁড়ায়ে
দাঁড়ায়ে রয়েছি যেন- দাঁড়াতে পারি না আর
কোনও এক মর্মবিদারক বিস্ময়ের ভারে যেন দেহ ক্রমে নুয়ে আসে
যেন কোনও গভীর অন্যায়- গাঢ়তর প্রেম: মানুষের তরে যাহা ছিল না ক’ কোনও দিন
আমার এ-শরীরকে মরুভূমিদের পথে ভ্রান্ত এক
কোণঠাসা উষ্ট্ৰশাবকের মতো মনে করে
এক স্তর বাতাসের লঘু জননীর স্বর ভেসে আসে
ধীরে-ধীরে পলাতক হয়ে আমি পৃথিবীর মানবসমাজে চ’লে যাই
এই ভেবে বিচলিত হৃদয়যন্ত্রেরে
অধীর ঘড়ির মতো তুলে নিয়ে ধূমাময় দূর নগরীর দিকে চেয়ে
সহসা নির্জন হাসি যেন কোন প্রণয়ী চাষার অনুভব করিলাম চোখ বুজে
মাথা হেঁট ক’রে যেন কোন মৌন গোপনীয় দৌত্যে আপনারে ছেড়ে দিয়ে।