নক্ষত্রমঙ্গল

(১৯৪২-৪৭)

রাতের আঁধার বাড়লে পথে প্রান্তরে কি ঘরে
থামে এসে সারাদিনের রীতি
সার্থবাহ নটীর হিসেব ফুরিয়ে গেলে তবে
হস্তা স্বাতী বিশাখা শতভিষা

যত না প্রিয় বাতির মতন জ্বলে বলে যেন
তাহার চেয়ে অনেক বেশি ধীকলরোল ক’রে:
‘সমস্ত দিন মেঘ ভেঙে কি বৃষ্টি হয়েছিলো?
কিংবা অঢেল রক্ত ঝরেছে?

এক পৃথিবীর সন্ততিদের আলোড়নের থেকে?
কালো মেঘের পিছে আকাশ ছিলো কি নীল তবু?’
‘জানি না সে সব। হে গুণ, মনপবনে প্রদীপ তারা,
আমার হৃদয় মৃৎশতাব্দীশীল;

তবুও হাতের মুখের রক্ত শিশির ঘাসে মুছে
হৃদয় আমি তারকাদের পানে
মানবসময় সরিয়ে আইনস্টাইনী লোক ভেঙে
ছড়িয়ে দিলে দিতাম অনবতুল, অনবতুলে;

কী মানে তবু নক্ষত্রদের- প্রেমের প্রতীক যদি
ক্লেদ পৃথিবীর পুরুষ নারীর থেকে সরে গিয়ে
নিখিলে রেতঃ হয়ে থাকে? মাটি সবুজ হয়
ইতিহাসের ক্ষমতাতীত রক্ত খরচ করে?’

‘তবুও অর্থ রয়ে গেছে- সুপরিসর ঢের;
ম্যামথ বা তার পাঁকের থেকে মানুষ এখন জেগে
স্বাতীতারার শিশির দিয়ে যে অনিমেষ গল্প বানিয়েছে
তাইতো প্রেম; যান নিরূপণ-জ্ঞানের প্রবলতর আবেগে।’

প্রতিক্ষণ। মাঘ ১৩৯১