অনির্বাণ

সর্বদাই এরকম নয়, তবু
মাঝে মাঝে মনে হয় কোন দূর
উত্তরসাগরে কোনো ঢেউ
নেই;
তুমি আর আমি ছাড়া কেউ
সেখানে ঢোকার পথ হারিয়ে ফেলেছে।

নেই
নীলকণ্ঠ পাখিদের ডানা-গুঞ্জরণ
ভালোবেসে আমাদের পৃথিবীর এই রৌদ্র;
কলকাতার আকাশে চৈত্রের ভোরে যেই
নীলিমা হঠাৎ এসে দ্যাখা দেয় মিলাবার আগে
এইখানে সে-আকাশ নেই;
রাতে নক্ষত্রেরা সে-রকম
আলোর গুঁড়ির মতো অন্ধকার অন্তহীন নয়।

তবুও আকাশ আছে:
অনেক দূরের থেকে নির্নিমেষ হ’য়ে
নক্ষত্র দু’-একজন চেয়ে থাকে;

চেয়ে থাকে আমাদের দিকে-
যেন টের পায়
পৃথিবীর কাছে আমাদের
সব কথা- সব কথা বলা
ডাভেন্ট্রিডোমেই টাসে স্টেফানিতে
যুদ্ধ শান্তি বিরতি নিয়তির ফাঁদে চিরদিন
বেধে গিয়ে ব্যহত রণনে
শব্দের অপরিমেয় অচল বালির-
মরুভূমি সৃষ্টি ক’রে গেছে;
-কোনো কথা কোনো গান
কাউকেই বলে নাই;
কোন গান
পাখিরাও গায় নাই। তাই
এই পাখিহীন নীলিমাবিহীন শাদা স্তব্ধতার দেশে
তুমি আর আমি দুই বিভিন্ন রাত্রির দিক থেকে
যাত্রা ক’রে উত্তরের সাগরের দীপ্তির ভিতরে
এখন মিশেছি।

এখন বাতাসে শব্দ নেই- তবু
শুধু বাতাসের শব্দ হয়
বাতাসের মতো সময়ের।
কোনো রৌদ্র নেই, তবু আছে
কোনো পাখি নেই, তবু রৌদ্রে সারাদিন
হংসের আলোর কণ্ঠ র’য়ে গেছে,
কোন রাণী নেই- তবু হংসীর আশার কণ্ঠ
এইখানে সাগরের রৌদ্রে সারাদিন।