সেখানে গম্বুজ এক

সেখানে গম্বুজ এক র’য়ে গেছে ঢের দিন
ক্বচিৎ বা অতিরিক্ত অতিথির তরে
সাধু উপদেশ দিয়ে চ’লে গেলে চৈনিক কনফুশিয়াস
জেগেছিল কোনও এক নিরয়ের প্রেমিকার কামনার স্বরে।
অথবা সে স্বর্গের শীত প্রণয়িনী
অনেক- অনেক দিন অবিমৃশ্যকারী এক বাতাসের মতো ঘুরে-ঘুরে
দানবের মুখাকৃতি এ-পাথর
সূর্যরশ্মিহীন এই অবিকল ঘর
হয়ে গেল ক্রমে তার হৃদয়ের রোলে- সহোদর
উঠিল গম্বুজ জেগে দানবের সাথে এক মানুষীর
গোপনীয় নিদ্রার সুরে
চির-দিন মানবীয় পথিকের পথ থেকে তিন বার তিন ধনু দূরে

মানুষের জগতে গাধার মতো
সালেমের ধারে গাধার মতো ঘুরে বহু দিন
তার পর সেই এক আতুরের হয়েছিল হর্ষ সমীচীন
খুলে গিয়েছিল চোখ বৈকালের নির্ঝরের মতো:

সম্রাটের সৈনিকেরা অবিকল বিবর্ণ রাসভ
ফিরোজা রঙের আলো নিয়ে
পশ্চিমের সূর্য ফেলে পৃথিবী ছাড়িয়ে
রাষ্ট্রবিপ্লবের সব বন্ধুরা প’ড়ে থাকে বরফের শব
মশাল নিভায়ে ফেলে তাই
পৃথিবীকে অন্ধকার ক’রে দিল সে আদিম ভূত
সারঙ্গের শব্দ তার ধীরে-ধীরে উঠিল জেগে অত্যন্ত অদ্ভুত
নোনাধরা দেয়ালের বৃত্ত থেকে খালি
মৃত পিতৃপুরুষেরা দিল করতালি:
চেয়ে দেখ- চেয়ে দেখ- এইখানে চোখে দেখা যায়
আবহমানের এক পরিচিত হংসীর মতন
ও কার ধবল ডানা পিলসুজে প্রদীপের আগুনে দাঁড়ায়
‘আকাশের চেয়ে বড়ো রাতের মতন কালো চুল-‘
কেউ বলে: ‘বিনুনির মতো কাঁপে’
কেউ বলে: ‘কবরীর মতন নির্ভুল’
কেউ বলে: ‘হয়ে গেছে- হয়ে গেছে তাহার অন্তিম’
‘প’ড়ে আছে গভীর সোনালি এক ডিম-‘
কেউ বলে…

বলিতে-বলিতে চুল সাদা হয় তাহাদের- রাত্রির কবলে
হাতের আয়ুর রেখা জ্ব’লে ওঠে চাঁদের অনলে
এক রূপ পেকে ওঠে তাহাদের দেহের শোভায়
সুন্দর সফেন দুধ খেয়ে-খেয়ে স্বর্গীয় হাতির
মানুষের দেহ ব’লে আধোঘুমে কভু চেনা যায়।