শত শতাব্দীর

মানুষ অনেক দূর চ’লে যায়- চ’লে যেতে চায়
নক্ষত্রের আকাশ- অগ্নির মতো জ্ব’লে;
তবু কেউ অভিজিৎ ধ্রুব স্বাতী লুব্ধক নয়;
মানুষের সেই সব সাধ শান্ত হ’লে
ঘিরে থাকে সঙ্গী দায়ভাগিনী পৃথিবী;
কিছু তার বরফের গন্ধে স্নিগ্ধ হয়,
কিছু সূর্যকরোজ্জ্বল ক্রান্তিবলয়,
সমুদ্রের ফেনশীর্ষ নীল কল্লোল।

ইতিহাস কত প্রাণবত্তার কথা
ভেবেছিল; সময়ের অন্ধকারে আজও রোজ ভাবে।
সৃষ্টির প্রাণের উৎস যেন
র’য়ে গেছে মানুষের সহজ স্বভাবে:
কখনও এঞ্জিন ডাইনামো প্রপেলারের উদ্রেকে মনে হয়।
তবু চোখ খুলে রেখে আশ্চর্য সংজ্ঞানে
ভয় থেকে আরও ভয় ভুল থেকে ভুলে
ছিন্ন বন্যমরালের মতন সে উড়ছে অকূলে।

মনে হয় মানুষের তবু এই শেষ
পরিণতি হয়তো-বা নয়;
যদিও ধর্ম ত্যাগ করেছে অনেক দিন আগে
তার সেই অতীতের মুদ্রার অভয়,
সমাজ স্বতোৎসার হারিয়ে নতুন
অনুশীলনের শক্তি ক্ষয় ক’রে ফেলে
অন্ধ তৎপরতার শূন্য লাভ ক’রে আজ
লক্ষ্যহীন ব্যক্তি আর জাতির সমাজ।

চারি দিকে মানুষ চলেছে সব গ্লানি
অন্ধকার তাপ ভয় দুঃখের আকাশে;
সময় ও বিষয়ের সহিত সংঘর্ষে
মরণ ও জীবনের যে দ্বয় মূর্তি ইতিহাসে
জাগে তারা মানুষকে জেনে নিতে বলে;
আত্মসমাহিত হয়ে নিতে;
কোথাও স্বর্গে নয়- এ-নিরভিমান পৃথিবীতে;
যেতে বলে গতি ও জ্ঞানের মর্মস্থলে।