পাষাণময়ী


আর কেন?- যাও যাও,
আমার এ মাথা খাও,
যাও যাও,- আর তুমি
জ্বালায়োনা মিছে?
তোমার সে ভালবাসা, তোমার সে প্রাণে মেশা
সব জানা গেছে!
বহু দিন কাছে এসে, বলেছিল হেসে হেসে,
এ দাসী তোমারি তরে
বেঁচে আছে ভবে!
সে শুধু কথার কথা, মনে কি আর আছে গো তা,
পাষাণে সুধার উৎস
কে দেখেছে কবে?


কোমল ফুলের মত
তব হাসি মুখ!
দেবী কি অথবা পরী, ইচ্ছে হয় হৃদে ধরি
শীতলি এ বুক!
আঁখি দুটি কি সুন্দর, সুধা ঝরে ঝর ঝর
হৃদয় মাতানো চারু
প্রেমের ফোয়ারা!
স্বর্গের সুষমা দিয়া, বিধাতা গড়েছে তোমা,
প্রেমের নিকুঞ্জ বনে
স্নেহপ্রতি-ধারা!


তব অই বক্ষস্থল, লাবণ্যেতে ঢল ঢল
অতৃপ্তি-মদিরা ভরা
অমৃতের খনি!
ফোটো ফোটো তাহে দুটি প্রণয়-পীযুষ ভরা
সোনার নলিনী!
তরঙ্গিত কেশ গুলি, নিতম্বে পড়েছে দুলি
বাতাসেতে চোখে মুখে
উড়ে এসে পড়ে!
হেরিলে সে রূপ রাশি, অমিয় মাখনো হাসি
পাগল হৃদয় মোর
সদা হু হু করে!


অধরে গোলাপ-গন্ধ, মুখে ঝরে মকরন্দ,
নবনী মাখনো যেন
ফুল্ল কমলিনী,
চন্দ্রের কৌমুদী-মাত তোমার সে রূপ রাশি;
সোনাশী কপোল দুটি
কোহিনুর মণি!
তথাপি- তথাপি তুমি, পাষাণী পাষাণময়ী
নাহি দয়া মায়া!
মুখেতে মধুর হাসি, অন্তরে গরল রাশি
প্রেমের জ্যোছনা-মাঝে
বিষাদের ছায়া!
আর কেন?-যাও যাও,
আমার এ মাথা খাও
যাও যাও,- আর তুমি
আলায়ো না মিছে!
তোমার সে ভালবাসা, তোমার সে প্রাণে মেশা
সব জানা গেছে!