রমণী কুসুম


ভুলেছ কি প্রাণ-প্রিয়ে
ভুলিতে কি পারিবে?
এত আশা ভালবাসা
সকলি কি ভুলিবে?
আমি ত তোমারে প্রিয়ে,
ভুলিব না জীবনে!
ভুলিলে বাঁচিব কিসে
এ আঁধার ভুবনে!


তোমার সে মুখ প্রিয়ে
হৃদে এঁকে রেখেছি,
তোমারি চরণ তলে
প্রাণ সঁপে দিয়েছি!
তুমি কি ভুলিবে মোরে?-
ভুলিতে কি পারিবে?
এত প্রেম এত স্নেহ
সকলি কি ভুলিবে?


রমণী-কুসুম তুমি
নাই তব তুলনা!
মালতী মতিয়া জুঁই
তব কাছে লাগে না!
তুমি যবে হে’সে হে’সে
কও কথা মানিনি,
আমাতে থাকিনে আমি
ভুলে যাই অবনী!


এস প্রিয়ে প্রেমময়ি
এস হৃদি মাঝারে!
আমি ত তোমারি প্রেমে
ভাসি দুঃখ-পাথারে!
তুমি কি লবে না মোরে
হৃদি মাঝে তুলিয়ে!
আদরে এ অশ্রু মোর
দিবে না কি মুছিয়ে!


কঠিন হৃদয় তব!
ভালবাসা জানে না!
চরণে দলিয়া যাও
ফিরে ও ত দেখনা!
কোমল কুসুম তুমি
কোমল ত্যজিয়ে!
পাষাণে গড়েছ প্রাণ,
ভালবাসা ভুলিয়ে!


এ কেমন রীতি তব
এ কেমন সাধনা!
যে জন বেসেছে ভাল,
তারে ভালবাস না!
এমন সৌন্দৰ্য্য রাশি
বিফলে কি যাইবে!
হৃদয় ভরিয়া তুমি
ভাল নাহি বাসিবে!


আমার এ হৃদি কুঞ্জে
তুমি প্রেম পাপিয়া!
তোমারি প্রেমের গীতে
প্রাণ গেছে ভরিয়া!
যদি না বাসিবে ভাল
কেন মোহ বাড়ালে!
এ শুষ্ক হৃদয়-কুঞ্জে
কেন ফুল ফুটালে!


দিন নাই রাত নাই
তব পানে চাহিয়া!
রয়েছে পাগল প্রাণ
তব আশে বাঁচিয়া!
কখন আসিবে তুমি
কবে ভাল বাসিবে!
আমার সাধনা প্রিয়ে,
এ জনমে পূরিবে!


সারাটি জীবন ভ’রে
করিয়াছি সাধনা!
সকলি কি বৃথা যাবে
পূরিবে না বাসনা!
হ’বেনা আমার তুমি
এ মানব জনমে!
এমন বিকট কীট
কেন হায় কুসুমে!