ত্রিধারা

(জন্ম, জীবন ও মৃত্যু)।


জীবন-প্রান্তরে ভ্রান্ত পথিকের প্রায়,
চলিয়াছি অবিশ্রান্ত,
দেহ প্রাণ ঘোর ক্লান্ত,
শক্তি নাই এক পদ দাড়াইতে হায়!


ঊর্ধে নিরাশার মেঘ উদগারে অনল,
চারিদিকে অন্ধকার,
স্বর্গ মর্ত্ত্য একাকার,
সম্মুখে পশ্চাতে হায় অনন্ত কেবল!


কেমনে হইবে পার এ মহা প্রান্তর,
একাকী কতই ভয়,
লক্ষ্য ভ্রষ্ট এ হৃদয়,
তাহে পাছে কতগুলি দস্যু ভয়ঙ্কর!


কোন পাপে ত্যজি আত্মা অনন্ত মিলন,
ভুলিয়া পূর্ব্বের কথা,
ভুগিতে সংসার-ব্যথা
লভয়ে বিয়োগ,- এই পার্থিব জনম!


সংযোগ বিয়োগ দুটি প্রবাহের মাঝে,
জীবন প্রান্তর পরে,
প্রাণীবৃন্দ সদা চরে,
সংযোগ,- খেয়াতে চ’রে যেতে হবে সাঁঝে।


এই খেয়া ভিন্ন আর নাহিক উপায়,
রাজা কিংবা মহারাজা,
অথবা দরিদ্র প্রজা,
সকলেরি এই পথে যেতে হবে হায়!


সাধনা তপস্যা যত সকলি নিষ্ফল,
জাতি-বর্ণ, ধর্ম্মাধর্ম্ম,
না বুঝি কোন মৰ্ম্ম,
আপনার কর্ম্মগুলি সাথের সম্বল!


যদি হায় ভ্রান্তি বশে যাই অন্য পথে,
সত্য জ্ঞান-প্রহরণে
কে ফিরাবে মত্ত মনে
কে দিবে দেখায়ে পথ কেবা আছে সাথে!


নাহি শক্তি, নাহি ভক্তি, ভয় হয় মনে
এ ত্রিধারা পাছ, করি,
জমিবে কি শেষ পাড়ি,
অথবা অর্ধেক পথে ডুবিব জীবনে!

১০
এ জটিল জৈব কাব্য বিচিত্র কেমন,
প্রতি অঙ্কে নবরস,
তাহে ভাগ্য পরবশ,
জন্ম মৃত্যু কৰ্ম্ম ভোগ,- বিচ্ছেদ মিলন!