বনস্পতি

কোথা হতে পেলে তুমি অতি পুরাতন
এ যৌবন,
হে তরু প্রবীণ,
প্রতিদিন
জরাকে ঝরাও তুমি কী নিগূঢ় তেজে-
প্রতিদিন আসো তুমি সেজে
সদ্য জীবনের মহিমায়।
প্রাচীনের সমুদ্রসীমায়
নবীন প্রভাত তার অক্লান্ত কিরণে
তোমাতে জাগায় লীলা নিরন্তর শ্যামলে হিরণে।
দিনে দিনে পথিকের দল
ক্লিষ্টপদতল
তব ছায়াবীথি দিয়ে রাত্রি-পানে ধায় নিরুদ্দেশ;
আর তো ফেরে না তারা, যাত্রা করে শেষ।
তোমার নিশ্চল যাত্রা নব নব পল্লব-উদ্গমে,
ঋতুর গতির ভঙ্গে পুষ্পের উদ্যমে।

প্রাণের নির্ঝরলীলা স্তব্ধ রূপান্তরে
দিগন্তরে পুলকিত করে।
তপোবনবালকের মতো
আবৃত্তি করিছ তুমি ফিরে ফিরে অবিরত
সঞ্জীবন-সামমন্ত্র-গাথা।
তোমার পুরানো পাতা
মাটিরে করিছে প্রত্যর্পণ
মাটির যা মর্তধন;
মৃত্যুভার সঁপিছে মৃত্যুরে
মর্মরিত আনন্দের সুরে।
সেইক্ষণে নবকিশলয়
রবিকর হতে করে জয়
প্রচ্ছন্ন আলোক
অমর অশোক
সৃষ্টির প্রথম বাণী;
বায়ু হতে লয় টানি
চিরপ্রবাহিত
নৃত্যের অমৃত।

২ অগস্ট, ১৯৩২