খেলা

এই জগতের শক্ত মনিব সয় না একটু ত্রুটি,
যেমন নিত্য কাজের পালা তেমনি নিত্য ছুটি।
বাতাসে তার ছেলেখেলা, আকাশে তার হাসি,
সাগর জুড়ে গদ্গদ ভাষ বুদ্বুদে যায় ভাসি।
ঝরনা ছোটে দূরের ডাকে পাথরগুলো ঠেলে-
কাজের সঙ্গে নাচের খেয়াল কোথার থেকে পেলে।
ঐ হোথা শাল, পাঁচশো বছর মজ্জাতে ওর ঢাকা-
গম্ভীরতায় অটল যেমন, চঞ্চলতায় পাকা।
মজ্জাতে ওর কঠোর শক্তি, বকুনি ওর পাতায়-
ঝড়ের দিনে কী পাগলামি চাপে যে ওর মাথায়।
ফুলের দিনে গন্ধের ভোজ অবাধ সারাক্ষণ,
ডালে ডালে দখিন হাওয়ার বাঁধা নিমন্ত্রণ।

কাজ ক’রে মন অসাড় যখন মাথা যাচ্ছে ঘুরে
হিমালয়ের খেলা দেখতে এলেন অনেক দূরে।
এসেই দেখি নিষেধ জাগে কুহেলিকার স্তূপে,
গিরিরাজের মুখ ঢাকা কোন্ সুগম্ভীরের রূপে।
রাত্তিরে যেই বৃষ্টি হল, দেখি সকালবেলায়,
চাদরটা ওর কাজে লাগে চাদর-খোলার খেলায়।
ঢাকার মধ্যে চাপা ছিল কৌতুক একরাশি,
প্রকাণ্ড এক হাসি।

আলমোড়া
জ্যৈষ্ঠ, ১৩৪৪