লক্ষ্যশূন্য

রথীরে কহিল গৃহী উৎকণ্ঠায় ঊর্ধ্বস্বরে ডাকি,-
“থামো থামো, কোথা তুমি রুদ্রবেগে রথ যাও হাঁকি,
সম্মুখে আমার গৃহ।” রথী কহে, “ওই মোর পথ,
ঘুরে গেলে দেরি হবে, বাধা ভেঙে সিধা যাবে রথ।”
গৃহী কহে, “নিদারুণ ত্বরা দেখে মোর ডর লাগে,
কোথা যেতে হবে বলো।” রথী কহে, “যেতে হবে আগে।”
“কোন্খানে” শুধাইল। রথী বলে, “কোনোখানে নহে,-
শুধু আগে।” “কোন্ তীর্থে, কোন্ সে মন্দিরে” গৃহী কহে।
“কোথাও না, শুধু আগে।” “কোন্ বন্ধু-সাথে হবে দেখা।”
“কারো সাথে নহে, যাব সব-আগে আমি মাত্র একা।”
ঘর্ঘরিত রথবেগে গৃহভিত্তি করি দিল গ্রাস;
হাহাকারে, অভিশাপে, ধূলিজালে ক্ষুভিল বাতাস
সন্ধ্যার আকাশে। আঁধারের দীপ্ত সিংহদ্বার-বাগে
রক্তবর্ণ অস্তপথে ছোটে রথ লক্ষ্যশূন্য আগে।

ক্রাকোভিয়া জাহাজ
৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯২৫