প্রভাতে

এক রজনীর বরষনে শুধু
কেমন ক’রে
আমার ঘরের সরোবর আজি
উঠেছে ভরে।
নয়ন মেলিয়া দেখিলাম ওই
ঘন নীল জল করে থই থই;
কূল কোথা এর, তল মেলে কই,
কহো গো মোরে-
এক বরষায় সরোবর দেখো
উঠেছে ভরে।

কাল রজনীতে কে জানিত মনে
এমন হবে
ঝরঝর বারি তিমিরনিশীথে
ঝরিল যবে-
ভরা শ্রাবণের নিশি দু-পহরে
শুনেছিনু শুয়ে দীপহীন ঘরে
কেঁদে যায় বায়ু পথে প্রান্তরে
কাতর রবে।
তখন সে রাতে কে জানিত মনে
এমন হবে!

হেরো হেরো মোর অকূল অশ্রু-
সলিল-মাঝে
আজি এ অমল কমলকান্তি
কেমনে রাজে।
একটিমাত্র শ্বেতশতদল
আলোকপুলকে করে ঢলোঢল্‌,
কখন ফুটিল বল্‌ মোরে বল্‌
এমন সাজে
আমার অতল অশ্রুসাগর-
সলিল-মাঝে!

আজি একা বসে ভাবিতেছি মনে
ইহারে দেখি-
দুখযামিনীর বুক-চেরা ধন
হেরিনু এ কী!
ইহারি লাগিয়া হৃদ্‌বিদারণ-
এত ক্রন্দন, এত জাগরণ-
ছুটেছিল ঝড় ইহারি বদন
বক্ষে লেখি!
দুখযামিনীর বুক-চেরা ধন
হেরিনু এ কী!

১৪ শ্রাবণ ১৩১২