রেলেটিভিটি

তুলনায় সমালোচনাতে
জিভে আর দাঁতে
লেগে গেল বিচারের দ্বন্দ্ব,
কে ভালো কে মন্দ।
বিচারক বলে হেসে,
দাঁতজোড়া কী সর্বনেশে
যবে হয় দেঁতো।
কিন্তু, সে সুধাময় লোকবিশেষে তো
হাসিরশ্মিতে,
যাহারে আদরে ডাকি ‘অয়ি সুস্মিতে’
পাণিনির শুদ্ধ নিয়মে।।

জিহ্বায় রস খুব জমে,
অথচ তাহার সংস্রবে
দেহখানা যবে
আগাগোড়া উঠে জ্বলি
রস নয়, বিষ তারে বলি।।

স্বভাবে কঠিন কেহ, মেজাজে নরম-
বাহিরে শীতল কেহ, ভিতরে গরম।
প্রকাশ্যে এক রূপ যার।
ঘোমটায় আর।
তুলনায় দাঁত আর জিভ
সবই রেলেটিভ।
হয়তো দেখিবে, সংসারে
দাঁতালো যা মিঠে লাগে তারে,
আর যেটা ললিত রসালো
লাগে নাকো ভালো।
সৃষ্টিতে পাগলামি এই-
একান্ত কিছু হেথা নেই।।

ভালো বা খারাপ লাগা
পদে পদে উলোটা-পালোটা-
কভু সাদা কালো হয়,
কখনো বা সাদাই কালোটা,
মন দিয়ে ভাবো যদ্যপি
জানিবে এ খাঁটি ফিলজফি।।

শ্যামলী, শান্তিনিকেতন
৩০.১২.১৯৩৮ – সকাল