রেশ

বাঁশরি আনে আকাশ-বাণী-
ধরণী আনমনে
কিছু বা ভোলে কিছু বা আধো
শোনে।
নামিবে রবি অস্তপথে,
গানের হবে শেষ-
তখন ফিরে ঘিরিবে তারে
সুরের কিছু রেশ।
অলস খনে কাঁপায় হাওয়া
আধেকখানি-হারিয়ে-যাওয়া
গুঞ্জরিত কথা,
মিলিয়া প্রজাপতির সাথে
রাঙিয়ে তোলে আলোছায়াতে
দুইপহরে-রোদ-পোহানো
গভীর নীরবতা।

হল্দেরঙা-পাতায়-দোলা
নাম-ভোলা ও বেদনা-ভোলা
বিষাদ ছায়ারূপী
ঘোমটা-পরা স্বপনময়
দূরদিনের কী ভাষা কয়
জানি না চুপিচুপি।
জীবনে যারা স্মরণ-হারা
তবু মরণ জানে না তারা,
উদাসী তারা মর্মবাসী
পড়ে না কভু চোখে-
প্রতিদিনের সুখ-দুখেরে
অজানা হয়ে তারাই ঘেরে,
বাষ্পছবি আঁকিয়া ফেরে
প্রাণের মেঘলোকে।

শান্তিনিকেতন
১৪ অগস্ট ১৯৪০,
[২৯ শ্রাবণ ১৩৪৭]